Tag: কবিতা

  • একটি মানুষ পোড়ে

    একটি মানুষ পোড়ে

    হঠাৎ আজ দেখতে এলে, কি বা এমন দেখার আছে?
    ভুলে যাওয়া পথের দিশা, কি প্রয়োজন খুঁজে দেখার,
    পোড়ে জীবন সে তো জানে, দহন জ্বালার গহীন তাপে,
    একটি মানুষ নিরবধি সকাল সাঁঝে পোড়ে।

    নতুন করে দৃশ্য পটে- কি বা আছে ঝালিয়ে নেবার,
    রঙিন তোমার জীবন আকাশ, উড়ছে ফানুস রঙ বে-রঙের,
    কি যায় আসে পুড়লে জীবন- যাক না পুড়ে গহীন তাপে
    একটি মানুষ নিরবধি সকাল সাঁঝে পোড়ে।

    মেঘ বৃষ্টি ঝড়ের কোপে- নদীর দু-কূল ফুলছে ফেঁপে
    চারদিকে তে নামছে আঁধার – ধ্বংস করে সর্বনাশের,
    আগুন যারে ছোঁয়নি কভু- বুঝবে কি সে দহন যাতন,
    পোড়ে যে জন সে তো জানে, যাক না পুড়ে গহীন তাপে,
    একটি মানুষ নিরবধি সকাল সাঁঝে পোড়ে,
    পোড়া ছাড়া তার জীবনে আর কোনো কাজ আছে???

  • কাকতাড়ুয়া

    কাকতাড়ুয়া

    হয়তো সে আসে পীতাভ সন্ধ্যায় কোনো
    ভেজা চুলে ভেজা মেঘের টুপটাপ
    অতল জলের রাশি ফুলে ওঠে স্ফীত
    যেন দুটো সমান নিখুঁত বুদবুদ পাশাপাশি,
    এলোমেলো দিন যায় সীমানা পেরিয়ে
    সীমান্তের ওপার থেকে যেমন উড়ে আসে
    পরিযায়ী পাখি তেমনি ছিপছিপে যুবতী ঝর্ণা ধারা
    পাহাড় পাথর টপকে নেমে আসে রমনিও সৌন্দর্য্যে,
    পাথরে ক্ষীণ স্রোতের দাগ, বাইরে কৃষ্ণপক্ষের রাত
    তার হয়তো ঘুম আসে না
    কনুই ভাঁজ করে ঢেকে রেখে চোখ
    পায়ের ওপর পা ডানে বাঁয়ে নাড়ালেই
    রিনঝিন বেজে ওঠে রুপোর নুপুর
    বাঁ হাতটা পেটের ওপর,
    তার কানে আসে ঝিঁঝি পোকাদের গান
    তার উৎকর্ণ দুই কান চিনতে চেষ্টা করে
    সিঁড়িতে কেউ এলো কিনা !
    যার আসবার কথা ছিল সে অপেক্ষা করে করে
    এখন নিশিকান্তপুরের চশমখোর মহাজনের
    ক্ষেতের কাকতাড়ুয়া, রোদে, জলে, বৃষ্টিতে একলাটি ঠাঁয়
    এরকম শ্রীহীন পোকায় কাটা শার্ট
    মাথার জায়গায় কালো হাঁড়ি
    আর একটা মোটে পা, খড়ের দুটো দুর্বল হাত
    পাখিরা ভয় পাবে কি
    সার্কাস ভেবে হাতে বসে কিংবা উড়তে উড়তে
    ফেলে দিয়ে যায় ঘৃণার পুরিশ! অকল্পনীয় অব্যার্থ নিশানায়
    কুট কচালি করা সব, তবুও সে এলো
    এলো এমন ভাবেই এলো যে
    প্রবল বৃষ্টি এসে ধুয়ে দিলো বিষ্ঠার দাগ
    যেন ওরা ছিলো কিছু অতি কুটিল মানুষের
    মিথ্যে অভিযোগ, গুন্ গুন্ করে গাইতে গাইতে
    সে এলো, ওই যে অদূরে বাড়িটির খোলা জানালার পেছনে
    নিথর রাতের ঝড়ে আরও একলা হয়ে গেলো!
    আরও নিবিড় হলো সেই দেখা ক্ষনিকের
    সেই জানা বারেকের !
    পলকহীন চোখে তাকিয়ে থাকে কাকতাড়ুয়া
    এমন নিখুঁত, নিটোল, প্রিয়দর্শিনীর
    না ঘুমোনো রাতের ইতিহাস তার মতো করে
    আর কেউ জানেনা !

  • আমার হাতটি ছুঁয়ে লিখো

    আমার হাতটি ছুঁয়ে লিখো

    কি যেন বলেছিলে,,
    তোমার নাকি লেখার ক্ষমতা হারিয়ে যাচ্ছে?
    দিনে দিনে বস্তুবাধী হয়ে যাচ্ছো মানুষদের মধ্যে,,

    তবে একটা কথা ভেবেছো কি,,
    হঠাৎ করেই লিখতে পারো তুমি
    এলো মেলো ভাবনার অতল থেকে গোছানো ভাবনা গুলো মূহুর্তেই তুলে আনতো জানো,,
    তবুও বলবে লিখতে ভুলে যাচ্ছো?

    এই তো সেদিন,,খাতার সাদা পাতা গুলো
    উল্টে পাল্টে দেখছিলে,ভাবছিলে কি লিখবে,,
    হঠাৎ কলম টা কাঁপা কাঁপা হাতে,চিন্তিত মনে
    লেখার চেষ্টায় বহু সময় ব্যয় করে দিলে,,সম্পূর্ণ সাদা পাতাটি কালো কালিতে ভরিয়ে তুললে
    ভাবনা গুলো কথায় প্রকাশ করলে,,
    তবুও কি বলবে লিখতে ভুলে যাচ্ছো?

    মন তো নয় পাথর,সেখানে গরুর আস্ত এক শক্ত খুঁটি
    বসানো টা বেশ কঠিনও নয়
    তাহলে কেনো হারিয়ে ফেলো মনের জোর
    জানো পারবে,,তবুও ভেঙ্গে পড়ো
    একটু সাহস নিয়ে এগিয়ে যাও,,সাদা পাতাটি ভরে যাবে মনের বলা,না বলা সব কথায়,,
    ভাবনারা এলোপাতাড়ি হয়ে উড়ে চলবে মন সীমানায়,,,,,

    এই নাও তোমার প্রিয় কলমটি, হাতটি ছুয়ে আরেকবার লেখো, একটু সাহস নিয়ে এগিয়ে যাও। সাদা পাতাটি ভরে যাবে….

  • ছোয়াঁটুকু প্রেম

    ছোয়াঁটুকু প্রেম

    মধ্যরাত, মৃদু বাতাসের শির শির আওয়াজ
    হৃদয় উতলা জোনাকি পোকার বহ্নি শিখা
    শরতের কাশবন এমনি উতলা মন
    বার বার ফিরে যাই
    বুকের কোণে জমিয়ে রাখা
    ঘূণেপোকার দল শেষ করে দেয়
    ঘুমহীন স্বপ্নাতুর দু’চোখ
    তাকিয়ে গগণ পানে
    উৎসুক বাতায়নে মনখানি রাখি সেখানে
    যেখানে স্পর্শ, অনুভবের হাত খানি
    হীমশীতল প্লাবন শুষেনেয় উন্মাদনা
    তবু ভয়ে কাঁপে বুক শিহরীত মন
    চেপে রাখি বারূদের বুদবুদ
    স্মৃতির অতলে হাতরে ফিরি এতটুকু প্রেম
    সেখানে লুকানো আবেগ বিস্ফোরিত দাবানল
    বুকের মধ্যে জ্বলন্ত আগুন তবুও নিশ্চুপ
    জ্বলে পুরে ছাঁই টুকু রেখে হাতেহাত ঘর্ষণে আগুন
    উষ্ণতায় ভরপুর চেতনাবোধ
    বিস্মৃত অতলে হারানো সুখ, ছুঁয়ে আছো এখনও।

  • আমি এক ডানা ছাড়া পাখি

    আমি এক ডানা ছাড়া পাখি

    আমি এক ডানা ছাড়া পাখি
    দূর দিগন্তের সীমানায় চেয়ে রই তোমার অপেক্ষায়
    তবুও মনের স্পর্শ আজীবন উড়ার ইচ্ছা জাগে,,
    কল্পনায় দূর-দূরান্তে ছূটে যাই তোমার খোঁজে
    মেঘ বালিকার সঙ্গে হাওয়ার তালে তালে,,

    তুমি তো ঐ আকাশের এক চিলতে নীল
    আর আমি তো মেঘে মেঘে দিশেহারা স্বপ্নীল,,।
    হঠাৎ হাওয়ায় ভেসে ভেসে এসো না,আমায়
    একটু ভালোবাসো না,,,
    তুমি তো মনের আলপনা তুমিই সেই প্রিয়
    যাকে প্রতিটা মূহুর্তে,প্রতিটা ক্ষনে নিজের মতো ভেবে যাই আমার করে,,,।

    আমি যেন মেঘবালার ছাঁয়া হয়েই পাশে আছি
    তোমায় নিয়ে হাজার বছর বাঁচি
    অব্যক্ত আশা গুলো ছুঁয়ে তোমায় নিয়ে একটু হাসি,,।
    প্রত্যাশার আশা নিয়ে এগিয়ে চলি তোমার দিশায়,,
    তুমি যে আমার সুখ পাখি
    বলো তোমায় কোথায় রাখি,,,।

    শত ভাবনারা তোমাকে ভাবে
    সাত রঙের ছোঁয়ায় স্বপ্নেরা রঙিন হয় তোমাকে ঘিরে
    আজও কতো ভাবনা তোমায় নিয়ে
    তবুও হয় না বলা,হয় না গোছানো তোমাকে
    আমার মতো করে,কল্পনায় সুখি করে
    তোমার নিয়ে ভেসে চলি হৃদয়ের নীল সাগরে,,

  • তুমিহীন শহর

    তুমিহীন শহর

    অলিতে গলিতে তল্লাটে মহল্লায়
    নিঁখোজ সংবাদ ছড়িয়ে পড়েছে।
    পোষ্টার মাইকিং রিকসার বেল
    সোশ্যাল মিডিয়াও সরব।
    তুমিহীন শহর কল্পনা আর বাস্তবে
    কেবল ধূসর মরুভূমি।
    যেখানে না থাকে প্রেম
    না আছে পিপাসায় জল
    না আসে উষ্মতায় নরম বাতাসের মেলা।

    একালে বা সেকালে দুজনাতে ন্যূনতম
    কয়েকটি মহাসমুদ্র তো পাড়ি দেবার কথা।
    চোখে চোখ রাখা সাইক্লোন ঝড় বন্যা
    সকলই জ্য় করবার হয় নেশা!
    অথচ আমি এখন শুষ্ক মরুর বুকে
    ক্যাকটাস দৃষ্টিতে দিনের বেলাতেও রাত্রি এঁকে চলি॥

  • পদ

    পদ

    প্রয়োজনে পদ প্রদান
    পদায়নের পূর্ব শর্ত পাপ
    পোষণ তোষণ পরিস্ফুটন
    পরিষেবা কেবল জ্বি জনাব!

    পদে থেকে পয়সা ঢালো
    পকেট থাকবে সুস্থ ভালো
    পাশাপাশি এগিয়ে চলো
    পারবে না তো তুমি কালো!

    পরজীবীদের পদ ভালো
    পারঙ্গমতা স্ফর্শকাতর
    পরিধি পুরো অভ্যান্তর
    পা দুলিয়ে দৃশ্যান্তর!

    পবিত্রতা নেই কিছুতেই
    পদে পদে পশ্চাদপদ
    পদ না থাকার এই বিপদ
    পদ হারিয়ে তুমি আপদ!

    পদ পদবীর এই ফাঁদে
    পদের জন্য কে কাঁদে
    পদ এখন সহজলভ্য
    পাওয়া যায় ফুটপাতে!

  • মা

    মা

    জন্ম দিলে তুমি মাগো
    তোমার জন্য উচ্চাসন
    তুমি ছাড়া এ পৃথিবীতে
    ছিল না যে সমীরণ।

    গর্ভে ধারণ তোমার পেটে
    নাভির সাথে সংযোগ
    আহার আমার তোমার থেকে
    ঈশ্বরের হুকুমে অন্তঃযোগ।

    তোমাকে ছাড়া এ ধরনি
    ছিল যখন অন্ধকার
    অন্ধকারে ছিলাম তুমি আমি
    ছিল তখন রুদ্ধদ্বার।

    আসছি ভবে তোমার কাছে
    হুকুম ছিল আল্লার
    খোদার কাছে তোমায় ছাড়া
    আমি আদম গুনাগার।

    আগে পরে মরণ হলে
    আখিরাতে কর পাড়
    তোমার দোয়া কবুল হবে
    মা জননী আমার।

    বুড়ো বয়সে আমার ঘরে
    তুমি আমার বেহেস্ত
    নেক নজরে যতবার দেখি
    হজ্বের ছোওয়াব ততো।

    মা আমায় দোয়া কর
    মানুষ আমি হতে চাই
    আরশ কুরসি লৌওহ কলমে
    তুমি ছাড়া উপায় নাই।

  • আলোর নিশানা

    আলোর নিশানা

    এখোনোতো চোখে আবীর মাখানো সন্ধ্যা
    ধীরে ধীরে নামে আঁধার কাজল রাত্রি ,
    দখিনা বাতাসে ফুটিছে রজনীগন্ধা
    আমরা দু,জন অজানা পথের যাত্রী।

    সুদূর আকাশে শুকতারা দেখি হাসে
    বনপথে দেখি আলো আঁধারীর খেলা,
    জ্যেৎস্নার আলো আমাকে যে ভালোবাসে
    আকাশে ভাসিছে সফেদ মেঘের ভেলা।

    সুদূর আকাশে রুপালী চাঁদের আলো
    পরিছে সে আলোক চোখে ,আঁধারিতে,
    দখিনা বাতাস বহিছে যে উচ্ছাসে
    আমরা চলেছি জীবন নদীর পাড়।

    ধ্রুবতারা দেখে দিক চিনে চিনে হাঁটি
    কত পথ দিয়েছি যে পাড়ি ,জীবন পথে,
    বন্ধুর পথ নয় যে গো পরিপাটি
    দুজনে শুধু নিরিবিলি কথা বলি।

    দুপথ এসে এক পথে হলো হারা
    অজানা দুজন হাতে হাত ধরি চলি,
    সুদুর আকাশে হাসে যেন ধ্রুবতারা
    আঁধারে শুধুই নিরিবিলি কথা বলি।

    সারারাত ধরে হেটেছি ফোটোনি সূর্য
    রাত অবসানে আলোর নিশানা হাসছে,
    দিগন্তে ওই দেখনা বাজিছে তূর্য
    সারা চরাচরে দিব্য বিজলি ভাসছে।
    তাই দেখি আজ পথের নিশানা উজ্জল
    দূর দিগন্তে।

  • শুনতে পাও

    শুনতে পাও

    শুনতে পাওনা তুমি; তুমি দুর, বহুদুর
    চিত্রকর তুমি; এখনও আকোঁনি
    সেই ছবি; আমি মৃতপ্রায়
    শুধুই তোমারে চায়;
    তোমার স্মৃতি রোজ গান গায়,
    জানো না? শোনো না কি? সেই আজানের ডাকাডাকি;
    তুমি নেই পাশে
    আমি বিকৃত উল্লাসে;
    চিৎকারে ডাকি,”শুনতে পাচ্ছ কি”
    বলি শোন, শোন এতো ডাকি
    সাড়া নাই,শব্দ নাই;
    ইচ্ছেগুলো অমানিশার অন্ধকারে
    আমি নিশ্চুপ ধ্রবতারা হয়ে;
    পুস্পিতার গন্ধে কাননের শোভাশ্রী
    মোহিত গন্ধে বিভোর আকুল রাতি;
    দেহ তরী নিয়ে চলে হৃদয়ের টানে,
    দুই নদীর আপন ব্রতি সংগোপনে;
    স্বপ্নমাখাঁ সুখগুলি আঁখি ছলছলে,
    হৃদপৃন্ডের আশাগুলো কাননের বিলে;
    আমি কথা শুনি জোছনার কথা;
    হৃদয়ের খিদে গিলে ফেলি চাঁদের সাথে;
    মহাসাগরের নীল জলরাশিকে জিগ্যেস করেছিলাম;
    স্মৃতির নৃশংস দরশুরা লাশের উপড় আমায় তাড়া করছে, কি করি;
    মহাসাগরের নীল জলরাশি নিশ্চুপ ছিলো;
    সূর্য আজ পশ্চিমে স্হির হয়ে আছে,
    দেখ দেখ চেয়ে আকাশের গায়;
    পরশে পরশে তার উজ্জল উপস্হিতি;
    আমি চোখের জল আকাশে বন্ধক রেখে নেয়ামত স্বরুপ তোমার শ্বাস ভিক্ষে করি;
    কি করে তোমারে বুঝাই;
    জানা নাই; জানা নাই…