Tag: কবিতা

  • কথা কাব্যের প্রেম

    কথা কাব্যের প্রেম

    মুগ্ধ আমি পুলকিত আমি
    শিহরিত হয় মন
    ছন্দ কাব্যে ভালোবাসার পরশ
    ছড়িয়ে দাও যখন।

    ছন্দ কাব্য ভালোবাসার আলো
    ছড়িয়ে যাও যখন
    এ’মন আমার ধিনতানাধিন নেচে
    ভালোবাসতে চায় তখন।

    জানি তুমি আমি হবো না কভু এক
    রইবো যোজন যোজন দুরে
    তবুও এ মন ভালোবেসে যায়
    বিরহে মন যে পোঁড়ে।

    মিশে থাকো তুমি নিঃশ্বাসে আমার
    জড়িয়ে নাও বুকে
    এ’মন আমার হারায় কোথাও
    ভাসিয়ে নেয় সুখে।

    তোমার আমার এই ভালোবাসা
    রইবে আমরন
    অধরা হয়ে থাকতে চাই আমি
    কাছে পেতে চায় শুধু এ’মন।

    না হোক কথা, না হোক দেখা
    চাওয়া পাওয়া না’থাক মনে
    ভালোবেসে শুধু মিশে যেতে চাই
    একে অপরের সনে।

    পবিত্র প্রেম এমনই হয়
    চাওয়া পাওয়া থাকেনা মনে
    যুগ যুগ ধরে ভালোবাসতে চায়
    বেঁচে থাকতে চায় স্মরণে।

  • সময়

    সময়

    সময়গুলো বিরহ আর বিষন্নতায় ভরা
    অবহেলায় ঝরে পড়া যেমন কৃষ্ণচূড়া…
    একটা দুটো স্বপ্ন ছিলো বিবর্ণ তার রঙ
    মনের উপর পড়ছে বুঝি মরচে ধরা জং;
    ব্যালকনিতে ঝুলে থাকা নিঃসঙ্গ অভিমান
    ডানা ভাঙা প্রজাপতির ব্যাকুল উপাখ্যান…
    ইচ্ছেগুলো হয়েছে আজ ভোকাট্টা ঘুড়ি
    বাক্সবন্দি কথাগুলোও হয়ে গেছে চুরি;
    নিস্তব্ধ মঞ্চে আর জলছেনা তো আলো
    কৃষ্ণপক্ষ চলছে বুঝি তাইতো এতো কালো!
    উদভ্রান্ত কবিতায় আজ নেইযে অন্তমিল
    বেদনার রঙ মেখেছে, হয়েছে তাই নীল…

    শিমু কলি
    ১/১১/২১

  • বেলাশেষে

    বেলাশেষে

    এখন আর লিখতে পারিনা
    ভাবনাগুলো ঘুরে ফিরে তোমাতে গিয়ে থামে
    আগে বৃষ্টির ফোঁটা গুনতাম
    পা ভিজিয়া পুকুর পাড়ে বসতাম
    প্রজাপতির পাখার রঙ সে যে কি সুন্দর
    নীলাকাশ কিংবা মেঘলা কালো আকাশ
    শিয়েলের বিয়ে শেষে রংধনু
    খোলা আকাশের নীচে চিত হয়ে কতো তারা গুনেছি
    কাঁদায় মাখামাখি হয়ে কতো ঘরে ফিরেছি
    সবকিছুর রঙ একই ছিলো যেমন তোমরাও দেখতে
    গন্ধও ছিলো এক, ছিলো ব্যথার বেদনা
    মুচকি হাসি, অট্টোহাসি সব তো একই ছিলো
    তবে আজ কেনো দেখিনা
    আজ কেনো লিখে রাখিনা
    কেনো এলে জীবনে বেলাশেষে
    কেনো সব থেমে যায় তোমাতে গিয়ে
    তোমাতে গিয়ে
  • মজিদ মাস্টারের টিনের চালাঘর

    মজিদ মাস্টারের টিনের চালাঘর

    সেঁতসেঁতে ভাঙ্গা টিনের চালাঘরে
    ‘টিনের চোখের’ ছিদ্র দিয়ে
    টপটপ করে ঝরে পড়ছে বৃষ্টির ফোঁটা
    মশারির উপর,
    আর মজিদ মাস্টারের একমাত্র তরকারীর বাটি
    বিশ্বস্ত সহচরের মতো যেন ঠিকঠাক বসে আছে
    একেবারেই বৃষ্টি-ফোঁটার নিচে।

    বেরসিক জানালার পাল্লা দুটিও
    কেন জানি আজ অজানা কোন বিরহে
    আর মাতাল কোন বৃষ্টির পরশে যেন
    বেহায়া হয়ে উঠছে বারবার,
    হতচ্ছাড়া জং ধরা ছিটকিনিটাও
    যেন ক্ষয়ে যাওয়া এক ‘ক্রোধান্বিত হাঁড়’।

    একাকিত্বের সহচর চেয়ারটির
    একখানা পা যেন ‘ঝুলে থাকা এক প্রতিবন্ধী’
    বাকি তিনখানা কোন এক অদৃশ্য মায়ায়
    অলিখিত এক নিষেধাজ্ঞা বুকে নিয়ে
    সেঁটে আছে কোন মতে…
    যেন ‘যাই যাই করে যাবেনা’ বলে
    টিকে থাকা এক ‘মানবিক কংকাল’।

    মশারির ভেতর থেকে আকাশ দেখতে দেখতে
    বেয়াড়া বৃষ্টির অঝোর ধারার কান্না দেখতে দেখতে…
    আর জানালার ফাঁক দিয়ে……
    কদমঘেরা ‘বাদল-মেঘের ছায়া’ দেখতে দেখতে
    গাঁয়ের বনঝোপ-নদী-মাঠে লুকিয়ে থাকা পরিত্যক্ত শৈশব দেখতে দেখতে
    প্লাস্টিকের চিরুনি দিয়ে ‘অদৃশ্য আয়নায়’
    চুল আর তালু আঁচড়াতে আঁচড়াতে
    ‘মনে পড়ে রুবি রায়’ গুনগুন করে গাইতে গাইতে,
    মজিদ মাস্টার হাতে নিলেন তার কবিতার খাতা
    লিখলেন তার অমর কবিতাখানি……….

    একদিন এইখানে গৃহ ছিল
    একদিন এইখানে আমি ছিলাম
    একদিন এইখানে সুখ ছিল
    এক দিন এইখানে সুর ছিল
    একদিন এইখানে কবিতা ছিল
    সিগারেট ছিল…
    ছাইদানি ছিল…
    ফুলের টব ছিল..
    কবিতার আড্ডা ছিল…
    জীবনানন্দ, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল ছিল,
    হ্যাগার্ড, টলস্টয়, নীটশে, এমারসন, টুর্গেনেভ…..
    ….. সবাই ছিল……
    জোনাকজ্বলা রাত ছিল…
    মায়ের ডাকা ‘খোকা’ ছিল
    বাবার হাতের ‘লাঠি’ ছিল
    ভরসা ছিল…
    বিশ্বাস ছিল…
    বকুনি ছিল…

    ভালোবাসার সুগন্ধি ফুলও ছিল
    তোমার দেয়া ‘ভুলনা আমায়’ রুমাল ছিল
    একদিন এইখানে তুমি ছিলে বলে
    একদিন এইখানে সব ছিল
    আর ছিল…
    ‘থালা ভর্তি অভাবের’ নিত্য আনাগোনা।

    এখন আর এইখানে কিছুই থাকে না
    শুধু থাকে আমি কিংবা আমার ছায়ামায়া স্মৃতি
    আমার ভাঙ্গা চেয়ার
    আমার প্রিয় বাটিখানা
    যত্নে রাখা চিঠি গুলো
    সবই যেন হাওয়ার কুহক
    কারন তুমি নেই বলে…
    আসলে এখানে আর কেউই থাকে না।

    মশারির ভেতরে ঘাপটি মেরে বসে থাকা লোকটি
    হঠাৎ মশারির চারটি গোন ছিঁড়ে ফেলে
    আর স্বপ্ন ঘোরে চিৎকার করে বলতে থাকে….
    আমার কবিতার খাতা ফিরিয়ে দাও
    আমার টাপুর টুপুর বৃষ্টির ফোঁটা ফিরিয়ে দাও
    আমার শৈশবটি ফিরিয়ে দাও
    আমার মধ্যদুপুরের একপশলা বৃষ্টি ফিরিয়ে দাও।

    গভীর তন্দ্রা থেকে হঠাৎ জেগে উঠে মজিদ মাস্টার
    শিশুচক্ষুর অন্তরাল থেকে
    দিগন্তে মুছে যাওয়া গ্রামের আড়াল থেকে
    ছেঁড়া-পুরোনো-ধুলোমলিন বইয়ের পাতা থেকে
    চাওয়া-পাওয়ার মাঝখানে লুকানো বিষন্নতা থেকে,
    ভালোবাসা ও অনভ্যস্ত কষ্টের মাঝখান থেকে
    কাল ও মহাকালের মাঝখানে গড়ে উঠা
    ‘অবৈধ আবাসন’ থেকে…..
    চিৎকার করে বলে ওঠে…..
    “এইবার পৃথিবীকে শিক্ষা দিয়ে যাব আমি…
    … সক্রেটিসের মতো নয়
    … এরিস্টটলের মতো নয়
    … পাঠ্যপুস্তকের মতো নয়
    … পুঁজিবাদী শিক্ষা নয়
    … অর্থতন্ত্রের শিক্ষা নয়
    … ঠিকে থাকার শিক্ষা নয়
    মানুষ ও মানবিক হওয়ার শিক্ষা।”
    বাহিরে তখনও অঝোর ধারায় বৃষ্টি
    আকাশে বিদ্যুৎ চমকানি……….

    আরণ্যক শামছ
    অক্টোবর ২২, ২০২১ইং

  • তুমি আসবে বলে

    তুমি আসবে বলে

    তুমি আসবে বলে অপেক্ষায় থেকেছি সারাবেলা
    তুমি আসবে বলে সুখের স্বপ্ন দেখে সাজিয়েছি মনের ডালা।

    তুমি আসবে বলে কত না স্মৃতি দুচোখে করেছে খেলা
    তবুও তুমি আসোনি, কেনো আসোনি!?

    কেনো তুমি দূরে চলে যেতে চাও?
    যতই তোমার কাছে যেতে চাই
    তুমি দূরে সরিয়ে দাও আমায়

    মনে পড়ে সেদিনের কথা?
    দুজনে পাশাপাশি হেঁটেছি
    কত না কথা বলেছি।

    তুমি চুপ চাপ শুনেছিলে আমার কথা
    তোমার কাছে কত না করেছি আবদার।
    তুমি আমার পাগলামো গুলো মেনে নিয়েছিলে
    তাই তো আমি পাগলামো টা বাড়িয়ে ছিলাম।

    কিছুতেই ছেড়ে যেতে চাইছিলো না মন
    একটু ভুলের জন্য চলে যেতে হলো আমায়
    নষ্ট সময় টুকু কখনো ফিরে পাবো না আর।

    খুব কষ্ট হয়েছিলো আমার
    হয়তো তোমার ও।

    লীনা ফারজানা
    ২ অক্টোবর, ২০২১ইং

  • জীবনচক্র

    জীবনচক্র

    সুর্যমন্ডলের ওই চারিধার
    জীবন কী ঘুরছে চক্রাকার,
    নিঃশেষ হয় কি ঘুরে ঘুরে
    অস্বিত্ব এই মানব জনমের।

    তারই মাঝে ছুটে চলা প্রানের
    অবিরাম গতি দিনশেষে রাতে,
    সময় বয়ে চলে ক্ষণে ক্ষণে
    মুহূর্ত মিনিট ঘন্টা দিন বছরে।

    পার হই সময় শৈশব কৈশোর
    তারুন্য যৌবনের পর আসে বার্ধক্য ,
    কমে আসে গতি জীবন ধীর স্হির
    স্বপ্নগুলোও স্বপ্ন দেখায় না আর।

    তাই বেঁচে থাকতে চাই নবীনের
    মাঝে যে স্বপ্ন দেখে নতুন সময়ের ,
    পৃথিবী বদলের ধারন করে হৃদয়ে
    আমার অপূর্ণ স্বপ্ন তারই অন্তরে।

    সময়ের কাছে প্রার্থনা একটু সময়ের
    আপন স্বপ্ন সবার মাঝে বন্টনের।

  • হৃদয়ের ক্ষত

    হৃদয়ের ক্ষত

    শরীরের কোথাও কেটে গেলে
    রক্ত ঝরে, ক্ষত দেখেও আঁচ
    করা যায় কতটা কেটেছে,
    হয়েছে কতটা রক্তক্ষরণ….
    কিন্তু হৃদয়!!
    হৃদয়ে যখন রক্তক্ষরণ হয়
    তখন কিভাবে বুঝবে?
    কিভাবে কতটা কষ্ট সয়ে
    হৃদয় ক্ষতবিক্ষত হয়?
    নীরবে রক্তক্ষরণ হৃদয়কে
    ধীরে ধীরে কতটা
    ঝাঝড়া করে ফেলে?
    অসংখ্য ক্ষত নিয়ে কিভাবে
    হৃদয় হয়ে যায় শক্তিহীন?
    হয়তো দৃশ্যমান কিছুই থাকেনা
    কিন্তু অদৃশ্য ব্যাথায় কুকড়ে
    যাওয়া হৃদয় আর কখনোই
    স্বাভাবিক হয়না….
    শরীর এর ক্ষত শুকিয়ে যায়
    সময়ের সাথে কিন্তু
    হৃদয়ের ক্ষত সারেনা
    আর কোনো অজুহাতেই…..
    ভালোবাসার অভাব, স্পর্শ সুখের অভাব,
    অবহেলার আধিক্য, অহংকার এর দাপট,
    কষ্ট দেয়ার মানসিকতা ইত্যাদি নানান অজুহাতে
    হৃদয় আহত হয়….. আহত হৃদয় ধীরে ধীরে
    মুমূর্ষু হয়ে পরে তারপর একদিন নিশ্চুপ হয়ে যায়….
    আর কোনো যত্নহীন ভালোবাসার প্রলেপের
    প্রয়োজন হয়না….
    জমেনা আর কোনো অভিমানের বুদবুদ…..
    সৃষ্টি হয়না আর কোনো দুঃখবিলাসী গল্প…

  • সম্পাত

    ধরাকে যে সরাজ্ঞান করছো
    করো বেশ….
    দেখো কিন্তু, ভুলেও রেখে
    যেয়োনা এর রেশ….

    চলে যাবে কদিন পরেই
    নয়তো অজানা….
    স্থায়ী নয় কোনো কিছুই
    ভুলে যেওনা…..

    উপরওয়ালা আছেন এক
    রশি যে তার হাতে….
    এক টানেতে মিশিয়ে দিবেন
    সন্দেহ নেই তাতে….

    অহংকারের মিছে বড়াই
    কেনই করো তবে….
    জানোই তো ঠুনকো সবি
    এই মায়ারই ভবে……

    কালো মনের কালির আঁচড়
    দিচ্ছো সাদা মনে….
    অভিশাপের প্রহর গুলো
    জমাও ক্ষণে ক্ষণে…..

    যা ইচ্ছে করো তুমি,
    মন যখন যাই চায়……
    উপরওয়ালাই জানেন
    তোমার কখন শেষ সময়…

  • অপেক্ষা

    মুঠোয় নিয়ে চললে তুমি
    স্বর্নচাঁপার প্রেম…..
    স্বযত্নে আগলে রেখো
    ভালোবাসার হেম….

    সবুজ সকাল, হলুদ দুপুর….
    কমলা রঙ বিকেল….
    বেগুনি রঙের সন্ধ্যা আর
    নীল নীলাভ রাত……
    সঙ্গে করে নিয়ে গেলে
    সুখের জলপ্রপাত……
    রেখে গেছো যত্ন করে
    ধুসর দিন আর রাত…..

    স্বর্নচাপার বুকের কাছে
    একটা জলের নদী….
    এই নদীতে জোয়ার আসে
    কাছে আসো যদি….

    এসো প্রিয় ব্যাকুলতার
    নিবিড় মুগ্ধতায়….
    এসো তবে শরৎ মেঘের
    ভরা পুর্নিমায়….
    জোছনা রঙে মন ভিজিয়ে
    আছি অপেক্ষায়….

  • মায়া

    মায়া একটা ভিষণ অসুখ,
    এই অসুখে আক্রান্ত প্রত্যেকের
    হৃদয়ে থাকে একটা গহীন জলের নদী,
    কষ্টের একবিন্দুতেই যা এনে দেয় প্লাবন….

    মায়া একটা ভিষণ অসুখ,
    এই অসুখে আক্রান্ত প্রত্যেকের
    নিউরনে থাকে একটা ভালোবাসার বীজ,
    যা অংকুরিত হয় প্রতিদিন নতুন করে…..

    মায়া একটা ভিষণ অসুখ…….
    ছোঁয়াচে, সংক্রামক ব্যাধির মতো
    এ অসুখ ছড়িয়ে যাক হৃদয় থেকে হৃদয়ে….

    শিমু কলি
    ০৯/০৮/২০২১ইং