Tag: কবিতা

  • ভ্যালেন্টাইন্স ভাবনা

    ভ্যালেন্টাইন্স ভাবনা

    একটা ভালোবাসা দিবস না এলে কি
    ভালোবাসার প্রকাশ হবেনা!
    একবার ভালোবাসি বলার জন্য কি
    একটা বিশেষ দিন বা তিথি র দরকার হয়!
    একটা ভালোবাসার মানুষ না জুটলে
    কি কবিতা লেখা হবে না।
    একটা কবিতা লিখে বিখ্যাত হবার জন্য নাকি
    একটা অসফল প্রেমের দরকার হয়!
    এতো শত ভেবে কি কখনো ভালোবাস যায়!
    সৃষ্টির আদিকাল থেকেই ভালোবাসার জন্য
    প্রাণীকুল ব্যাস্ত, তখন তো দিবস পালিত হয়নি।
    জোর করে পাজি ঠিক করে যেমন ভালোবাসা হয়না ,
    তেমনি মনে যদি প্রেমানুভুতি না ই থাকে
    তবে দিবস পালন করে কি হবে।

    ফাতেমা হোসেন
    ২/২/২২

  • ছোঁয়া যে নিষিদ্ধ!

    ছোঁয়া যে নিষিদ্ধ!

    তোমার ও তাহার একান্ত আলাপ। মম রুমিকে শুভ সকাল জানায় এবং তারপর…

    • শুভ সকাল
    • আদর সকাল। কেমন আছো?
    • পায়ের ব্যথাটা বাদে ভালো আছি।
    • মন ভালো?
    • হুম। ভালো।
    • মনটা তবে আমায় দিয়ে দাও।
    • মনের ভার বইতে পারবে তো?
      আর তোমায় দিয়ে আমি যে নিঃস্ব হতে চাইনা।
    • মন দিলে কেউ নিঃস্ব হয়না। রেখে দেবো বুক পকেটে।
    • দিয়েছো কখনো তুমি মন?
    • দিয়েছি তো। শুধু নিয়েই গেলো, দিলোনা যে!
    • তার মানে ঠকেছো?
    • উত্তর তো তোমার কাছেই হতে পারে।
      নিয়েছো তো! এবার যে তোমার দেবার পালা!
      দিওনা। উত্তর কি পেলে? কে ঠকলো?
    • আমি এতো কঠিন কথা বুঝিনা গো।
    • যেদিন দেবার জন্য খুঁজে ফিরবে, সেদিন?
    • সেদিন তোমাকে খুঁজে বের করবো।
    • কথা দিলাম – নিঃশ্বাসেরও কাছে থাকবো।
    • বাদ দাও। বৃষ্টি হচ্ছে?
    • নাহ, তবে মেঘলা আকাশ।
    • ওহহ, এখানেও তাই।
    • চলো হাত বাড়িয়ে আকাশ ছুঁই;
      তার আগে হাত বাড়িয়ে তোমায় ছুঁই?
    • ছোঁয়া যে নিষিদ্ধ!
      তুমি তো জানো আমি অন্যের, আবার
      আমি তোমারও
      আমায় রেখো তুমি শুধু –
      বুকপকেটে।
  • আছি

    আছি

    হারাবার ভয় কিসে?
    ডায়েরির পাতা ধরে রেখেছে যে আলোর স্মৃতি
    ধূসর সোনালী হয়ে।
    কলমের কালিও গোধূলীর রঙে
    রেখেছে ধরে পরশমণি, হাতের ছোঁয়া…
    অনুভবে কি পাও, সেই মধুমায়া ক্ষণ?

    তুমি শিশির বিন্ধুর ‘পরে যখন আমি
    ভোরের রোদ হয়ে আসি, তখন
    হ্যাঁ – ঠিক তখন তুমি
    যেভাবে হাসি দিয়ে আলোকছটা ছড়াও
    সে আলোর ‘পরের ধুলো বালিও
    হাসতে থাকে…
    দেখতে কি পাও?

    আছি। আছি তো এখানেতেই তোমার;
    আর –
    বলছি আমি ডায়েরির পাতা থেকে!

  • একটি কবিতার জন্য

    একটি কবিতার জন্য

    একদিন হয়তো সেইসব পথে নয়,
    যে পথে খুঁজে বেড়িয়েছ একখানি
    কবিতাকে পাবার জন্য!
    ঘরের চার দেয়ালের মাঝে অথবা
    খোলা অলিন্দের চৌকাঠে ই হয়তো,
    কবিতার সাথে তোমার দেখা হয়ে যাবে!
    নয়তো খোলা বাতায়নে দখিনা বাতাসে
    কবিতারা এসে লুটিয়ে পড়বে তোমার
    পেলব মসৃন হাঁসের পাএর মত পদ যুগল
    চুমে যাবে তোমার কাংখিত কবিতাখানি!
    সেদিনের জন্য হয়তো তোমার কোনো প্রস্তুতিই
    থাকবেনা, আঁকবে না চৌকাঠে ভালোবাসায় আল্পনা!
    তবুও সে আসবে, নাম ধরে তোমায় ডাকবে
    আনন্দে অশ্রুপাত করে নস্ট কোরোনা যেন
    সেই সে প্রতিক্ষিত মাহেন্দ্রক্ষণ!
    ভালো থেকো তুমি আর তোমার মন!

    ফাতেমা_হোসেন
    ৩১/১/২২
    সকাল সাড়ে নটা
    বন্ধু,শাহনাজ পারভিনের কবিতার উত্তরে এই কবিতা খানি এইমাত্র বেরিয়ে এল।

  • কবিতার সাথে দেখা…

    কবিতার সাথে দেখা…

    একদিন হয়তো সেইসব পথে নয়
    ঘরের চার দেয়ালের মাঝে
    খোলা অলিন্দের চৌকাঠেই
    কবিতার সাথে তোমার দেখা হয়ে যাবে
    নয়তো খোলা বাতায়নে দখিনা বাতাসে
    কবিতারা এসে লিটিয়ে পড়বে তোমার
    পেলব মসৃণ হাসের পাত্রর মত পদ যুগল
    চুমে যাবে তোমার কাঙ্ক্ষিত কবিতাখানি!

    সেদিনের জন্য হয়তো তোমার কোনো প্রস্তুতিই
    থাকবেনা, আঁকবে না চৌকাঠে ভালোবাসায়
    আল্পনা!

    তবুও সে আসবে, নাম ধরে তোমায় ডামবে
    আনন্দে অশ্রুপাত করে নষ্ট কোরোনা যেন
    সেই সে প্রতিক্ষিত মাহেন্দ্রক্ষণ!

    ভালো থাকো তুমি আর তোমার মন!

    ফাতেমা হোসেন
    ৩১/০১/২০২২ইং সকাল সাড়ে ন’টা

  • দ্বান্দ্বিক

    দ্বান্দ্বিক

    এজীবন সরলে গরলে
    নরমে গরমে কেটে যায় বেলা!
    তবুও কোথাও হয়ে যায়
    একতরফা হেলাফেলা!
    তোমার সংগে বেঁধেছি
    আমারও প্রাণ সুরের বাধনে..
    না কবিগুরুর মতো করে নয়।
    রাবীন্দ্রিক কিছুইতো নয়,নয়কো ছান্দিক
    শুধু ই চলে এজীবন দুই তরফা দ্বান্দ্বিক!
    যখন জীবন চাইছে প্রশংসা তোমার
    তুমি বুঝে না বুঝেই ঠোঁট উল্টে কর তার সৎকার!
    অথচ সেই তুমিও অন্যের সাফল্যে
    যখন হচ্ছ সত্যি সত্যিই আবেগ আপ্লূত,
    তোমার সেরূপ দেখে জীবন হয় অযথা বিব্রত!

    ফাতেমা_হোসেন
    ৩০/১/২২

  • সংসার

    সংসার একটা চক্রব্যূহ
    যেখানে আনন্দের সাথে
    অনেক স্বপ্ন নিয়ে, আকাংখা নিয়ে
    ঢোকা তো যায়,কিন্তু চাইলে ও সেই
    মায়াজাল ছিঁড়ে বেরিয়ে পড়া হয়না!
    প্রায় ই অভিমানে অনুযোগে বেরিয়ে পড়তে
    বড্ড ইচ্ছে হয়
    তারপর পর ই ভাবনায় আসে প্রিয়জনদের মুখ
    সুখ-সুবিধা, হাজারো মায়া কাজ করে তাদের জন্য!
    স্বামী একলা হয়ে যাবেন,সময় মতো নাস্তা,ওষুধ কে
    দিবে, সকাল বেলায় চা’টা একা করে খাবেন!
    বড়ো বাবু শুকনো রুটি খেতে পারেনা,গলায়
    আটকায়,তাই ওর জন্য ডিমের কুসুম আস্ত থাকবে
    সাথে আলুর দম,বা ছোলার ডাল সাথে একটু সুজির নরম পায়েস,ওটা শুধু মা ই পারেন!
    ছোটো জনের নাস্তার বালাই নাই,
    যা দিবা তা ই খায়,কিন্তু কুসুম গালিয়ে ডিমটা কড়া
    করে ভাজি,কতক্ষণ পরপর একটা বিশেষ নামে
    মা তাকে ডাকতে হবে।
    ভুলে গেলে ই এসে বায়না ধরে, আমাকে বু…ল..বল!
    দুদিন কোথাও যাব,উনি যাবেন না তাই দোটানায়
    শান্তি মতো বেড়ানো হয়না।
    আর যদি যাওয়াও হয় তবে ফিরলে কত অভিযোগ
    তুমি ছিলে না এই হয়েছে ঐ হয়েছে..
    এরপর আর কোথাও কি বেরোতে ইচ্ছে হয়!
    যদি ও জানি একজনের না থাকাতে কারো কিছু
    যায় আসে না।
    থেমে থাকেনা সংসারের কোন কিছুই!
    মেয়েরা অন্যের সংসারটা নিজের মনে করেই করে
    চলে বছরের পর বছর!
    তারপরও বারবার ই মন চলে যায় অন্য কোথাও
    বলে যায় এতো তোর নয়, ছিলো না কখনো ও!

    ফাতেমা_হোসেন
    ২৮/১/২২

  • সেদিন তুমি বৃষ্টি হয়েছিলে

    সেদিন তুমি বৃষ্টি হয়েছিলে

    সেদিন তুমি বৃষ্টি হয়ে ঝরেছিলে আমার ওপর!
    বন্ধ দুচোখে আমি অনুভব করছিলাম তোমায়
    আমি ক্রমাগত হারিয়ে যাচ্ছিলাম কোথায় যেনো!
    শিশির পড়ার মতো শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম রন্ধ্রে রন্ধ্রে
    রজনীগন্ধার স্নিগ্ধ ঘ্রাণে মৌ মৌ করছিলো সারাটা উঠোন
    আমি চোখ মেলতেই দেখলাম এক জোড়া প্রজাপতি
    কী যত্ন করে রঙ এঁকে দিলো আমার চোখ, মুখ ঠোঁটে!
    তোমার মায়াবী চোখের মতো ওরা স্বপ্ন আঁকছিলো
    আমার মুখ জুড়ে, আমার মন জুড়ে, আর…
    আমার সমস্ত অস্তিত্ব জুড়ে!
    জানো! তোমার হাসিটা আমার ভীষণ প্রিয়
    এমন নির্লোভ হাসি আমি কখনো দেখিনি
    তোমার বুকের স্পন্দনে মিশে থাকা মায়া,
    আমার সমস্ত শরীরকে মায়াময় করে তোলে
    আমি তলিয়ে যাই আটলান্টিকের অতল গহ্বরে
    তুমি বৃষ্টি হয়ে ঝরেছিলে আমার ওপর
    আমি সিক্ত হয়েছি, আমি স্নিগ্ধ হয়েছি
    আমি পাল তুলে নৌকো ছেড়েছি অজানা গন্তব্যে
    তোমার জন্যে আমার আছে একমুঠো মরণ
    তোমার দেয়া ব্যথাই আমার সুখে স্মরণ!

  • শেকড়

    শেকড়

    দিগন্ত বিস্তৃত যে ফসলের মাঠ
    যে অপরুপ শ্যামলিমা
    আমার মুগ্ধ দু’চোখ ,
    আমার পূর্বপুরুষের ভিটে
    আমার পিতৃভূমি স্বদেশ
    বাংলাদেশ।
    চরপাতুরিয়া গ্রাম চত্রার কূলে
    যেখানে গেঁথে আছে শেকড়
    আমার ও আমার পূর্ব পুরুষের।

    খুঁজে ফিরি সেখানেই পদচিহ্ন
    আমার পিতৃপুরুষের
    এই ফসলের মাঠ
    জমির আল ধরে তারাও হেটে
    গেছে নিজ শেকড়ের সন্ধানে।

    হয়ত আমারই মত
    মনের ভালোবাসার কথামালায়
    নীল আকাশ আর সবুজ শ্যামলিমায় ,
    স্বদেশ ভূমিতে শেকড়ের গভীরে
    প্রিয় চত্রার উপকূলে
    চরপাতুরিয়া গ্রামে।
    যেখানে শুয়ে আছে মাটির
    গভীরে প্রিয়জন আমার।

  • নিম্নবিত্তের ভাঙা স্বপ্ন

    নিম্নবিত্তের ভাঙা স্বপ্ন

    সেই ভোর থেকে ছুটোছুটি
    দূরের শহরে বয়ে নিতে হবে সব্জীর বোঝা
    খালি পা, ধূলোমাখা হাঁটু
    দুটি রুটি সাথে পলিথিনে বাঁধা
    হারুর মায়ের শেষরাতে ওঠা সারাবাড়ি কাজ
    সংসার হাতছানি দেয় ;

    হারুর কাকা সুশীল
    বহুকষ্টে আজপর্যন্ত অশিক্ষিত হারুর বাপ ভাইকে কলেজে ভর্তি করাতে পেরেছে –
    সব্জীর বোঝা কাঁধে নিয়ে স্বপ্নের পথ দেয় পাড়ি -;
    কতো কথা —
    হারু বড় হবে, কাকা অনেক বড় করবে হারুকে —
    একদিন এমন ছেঁড়া কাপড়ের দিন যাবে কেটে, দু’বেলা রুটির বদলে আসবে হাসিমুখে ভাতের দুপুরবেলা-

    সত্যিই সুশীল একদিন ব্যাংকের অফিসার হয়, দাদা-বৌদির ঘামেভরা মুখে খুশির ঝিলিক -” আমাদের সুশীল-!”
    সুশীল দাদা-বৌদি আর হারুকে নিয়ে স্বপ্নের প্রথম সোপানে রাখে পা –
    হারু ভালো স্কুলে ভর্তি হয়
    দাদা গ্রামের বাজারেই তরিতরকারি নিয়ে বসে, দোকানে বসেই তৃপ্তির লাল চা এককাপ এনে ধরিয়ে দেয়
    ঝন্টুর বউ —

    জ্বর আর কাশি নিয়ে ব্যাংক থেকে ফেরে সুশীল –
    বৌদির উৎকণ্ঠা
    দাদার দৌড়ঝাঁপ
    হারু শুধু ফ্যালফ্যাল চেয়ে দেখে—

    অতঃপর হাসপাতাল
    তিনদিন পর অমিক্রনের কাছে পরাজিত হলো নিম্নবিত্তের সব সাধ, সব স্বপ্ন—!