Tag: কবিতা

  • এখোনো কাঁদে মন

    এখোনো কাঁদে মন

    মেনে নিয়েছে মানিয়ে নিয়েছি ক্ষত
    সাগর যেমনি শুষে নেয় তার বক্ষে পৃথিবীর সব ক্ষত
    ওরা আসবে চুপি চুপি সাগর সুনামি হয়ে
    লণ্ডভণ্ড করে জানাবে সব ক্ষতের প্রতিবাদ একদিন
    দেখ!

    ওরা মানবেনা দেখেনিও!
    ওরা মানবেনা ক্ষত!
    ওরা মানবেনা!
    দেখেনিও!

    হারনি তোমরা, হেরেছি তো আমরা
    আরো হার হয়তো আছে…
    আছে হয়তো আরো
    অপমান লজ্জা পরাজয়!
    এ আমাদের প্রাপ্য ছিল না!

    আর তোমরা?

    তোমরাতো
    অমর অক্ষত!
    চির জাগরূক অমলিন!
    তোমরা হারবে না কোনদিন!
    পৃথিবী দেখবে নিশ্চিত একদিন
    জেনো!

    ওরা মানবেনা ক্ষত ! ওরা মানবেনা! দেখেনিও!
    সহস্র সালাম রইলো তোমাদের!
    নিশ্চিত থামবেই
    হারানোর অস্রুধারা একদিন
    সশস্ত্র সালাম থাকবে তোমাদেরই চিরদিন
    এখোনো কাঁদে মন!

  • পিতা ও পৈত্রিক

    পিতা ও পৈত্রিক

    বিশাল আকাশ আর বটবৃক্ষ
    বক্ষ জুড়িয়া আমার,
    আমার-ই তো সমগ্র,
    তিনিই অক্ষ।

    বৃক্ষ ও আকাশ আর প্রাণ
    উদারতা শিখরতা,
    শিখড়-ই তো টান,
    তাহারই দান।

    একদা তাহারি প্রবাহে
    পরমে প্রেরিত জঠরে
    জগৎ জুড়িয়া তখনই আমি
    আলোতে অবগাহিত।

    প্রবাহিত আমি
    প্রসারিত আমি
    আমিত্ব তাহারি নিমিত্ত,
    কাল থেকে কালে
    এখন বিকালে
    শুধু আমি একাকিত্ব।

    তবুও পিতা অপরাজিত
    আমারই সত্তায়,
    পিতা আমাতেই বর্তায়।
    এখন আমি পিতার পৈত্রিক।

  • ঋতুরাজ

    ঋতুরাজ

    ঋতুরাজ বসন্তের আগমনী বার্তা
    রাজকাহনে ফাগুনের গল্প
    রাজলক্ষ্মী রাজকুমারের আনাগোনা
    ফুলের সুরভি চিত্রকল্প
    প্রত্যয় অভিব্যক্তি প্রকাশিত ধারা
    তারুণ্য প্রদীপ্ত উচ্ছ্বসিত
    আবেগ আপ্লুত অনুভূতি প্রস্ফুটিত
    মহিমান্বিত নকশা আবির্ভূত।

    সকল হৃদয় নতুন চিত্রাঙ্কন
    হারানো স্মৃতি ভস্মীভূত
    মোড়ক উম্মোচন আগামী দিন
    উদিত স্বপ্ন উৎক্ষিপ্ত
    ফাগুনের আগুনে পুড়ে ছারখার
    বাসন্তী রঙের গুলবাহার
    হলুদ লাল সবুজ সাদা
    রামধনুর রঙে ঋতুরা।

    মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ
    ঢাকা, বাংলাদেশ।
    তারিখ-২৩/০২/২০২২,খ্রিস্টাব্দ

  • ভালবাসার স্বরুপ

    ভালবাসার স্বরুপ

    যার বিষাদ নেই সে ভালোবাসা বোঝেনা!
    আমার গোপন বিষাদ যে তুমিই
    সেও জানলেনা।

    যার কান্না নেই কস্ট নেই সে ভালোবাসা বোঝেনা!
    গোপন কান্না হয়ে তুমিই যে জুড়ে
    আমার আসমুদ্র বুকে
    সেও দেখলেনা।

    যার ভালবাসা নেই সেই হয়তো ভালবাসা বোঝে!
    জানিনা!
    তবে, এটুকু জানা,
    আশায় ভালবাসার তীর মেলে!

    ভালবাসা মানেই যে, খুঁজে বেড়ানোর আনন্দ
    সুখের ঠিকানা খোঁজা,
    খুঁজতে খুঁজতে হয়রান মন!
    ভালবাসা মানেই যে, অভিমান রাগ উদ্বেগ
    বিরহ ক্ষোভ দহন
    জ্বালার উত্তপ্ত কোন এক বন!

    ভালবাসা তাই কেন যেন সবার নয়
    সবার জন্য নয়,
    সবার হয়না, সবার যায় ও না!

    ভালবাসা তাই বুঝি এখনও হয়ে আছে
    কোন এক বেদনার তটে বিষাদের নিমন্ত্রণ
    মনের নিহারিকায় বিরল আকাশ!

  • ছুঁয়েছে অন্তর

    ছুঁয়েছে অন্তর

    বাংলা একাডেমির বইমেলায়
    শেষ বিকেলে সূর্য অস্ত যাবার সময়,
    বন্ধুর কবিতার বই হাতে
    উল্টে পাল্টে দেখছি কবির জীবন দর্শন
    ভাবনা, ভালোবাসা, বেদনা যা রয়েছে তার
    প্রতিটি কবিতার ছত্রে ছত্রে।

    হটাত যেনো কে একজন বলে উঠলো
    আপনিও তো কবিতা লিখেন তাই না!
    বিস্মিত আমি চমকে তাকালাম!
    দেখলাম এক সুন্দরী রমনী পাশে
    তুমি কিভাবে জানো নবীন কবি এই আমিকে!

    পড়েছি আপনার কবিতা পেন্সিলে
    নানা ভাবনায় আপনি কবিতা লিখেন
    আমি পড়ি,সবসময় আপনার কবিতা।
    মনে হলো ধন্য আমি ধন্য আমার
    কবিতা লেখার কাব্যভুবন
    যা ছুঁয়ে যেতে পেরেছে পাঠকের অন্তর।

    আমার কল্পকথা ছুঁয়েছে ওই পাঠক হৃদয়
    এখানেই কবি সার্থক।
    যে চেষ্টা করেছে ছড়িয়ে দিতে নিজের চেতনা
    চেনা অচেনা পাঠকের মনের বাতায়নে।

    একজন কবিতার পাঠক সুনেহেরি চৌধুরী
    আমার প্রকাশিত কাব্যগ্রনহ “কথামালা তুমি “ সহ পান্জেরী প্রকাশনির স্টলের সামনে।

    ~শাহনাজ পারভীন মিতা

  • রক্তের কালিতে

    রক্তের কালিতে

    চাইলেই কি কেউ প্রমিথিউসের জ্ঞান ছিনিয়ে নিতে পারবে?
    ভুমধ্যসাগর ভারত সাগরের পাড়ে বসে চৈতালি বসন্তে ক্লিউপেট্রা ফিরে আসে বারবার!

    ভাবনার করিডোর নিউমার্কেট পেরিয়ে রবিন্দ্র সরোবরে লুটিপুটি খায়—
    একজোড়া পানকৌড়ির বেশে মাতাল চুমুকে তুলে আনে
    যত ভালবাসার পদাবলি
    উতকন্ঠিত পদ্মাপাড়ে আফ্রোদিতি দেখে নীল চোখে অমোঘ বেদনার ঘুপচি অলিগলি
    পতেঙ্গায় অস্তগামি সুর্যের বিদায় হাসিতে কষ্টেরা সাতরে পার হয় কর্নফুলি থেকে বঙ্গসাগর…।

    তবু কিছু কথা কবিতার শব্দে ক্ষোভ ছড়ায় শেষের কবিতায় বিষের বাশির সুরে,
    সকাল সুর্য ঠিকরে পড়ে পাহাড়ের চুড়ায় মেডিকেল হোষ্টেলে হতাশ প্রেমিকের চিবুক জুড়ে
    উন্মুক্ত খেলার মাঠে কাটাকুটি খেলা চলে স্মৃতির বিচ্ছেদি সবুজ ঘাসে।

    রুপালি গিটারের তার ছুয়ে পাচলাইশে লাশকাটা ঘরে চলে ইতিহাসের যত ব্যবচ্ছেদ —
    নাড়িছেড়া সংলাপেরা বাস্তবতার ছুরিকাঘাতে নিহত হৃদয়ে ছন্দ তুলে যখন তখন
    তবু সি আর বি ঘিরে চলে রক্তমাখা জিহবার আস্ফালন
    নীল আলোকে সাদা ঝলকে উছলে উঠে অবিনাশি সুখের বন্ধন।

    কাটা যন্ত্রনার পরিত্যক্ত বিছানায় আবেগগলিত নবজাতক চিতকার করে বলে,
    এই অবৈধ মিথ্যে অপবাদের আগামি আমি নই
    এসো সবাই মিলে এই বঙ্গবন্ধু মুর‍্যালে দাঁড়িয়ে বলি
    আর নয় তত্বীয় সব জ্ঞানের হিজিবিজি পৃষ্ঠার বন্দি আয়ুর মেকি হাসির বিশুদ্ধতা
    নীলক্ষেতে পুড়ে যাওয়া স্বপ্ন আর আশার ধোয়ায় ছাই উড়িয়ে…
    এসো ওয়ার সিমেট্রির নীরবতায় সাদা এপ্রনে লিখি অভুক্ত ছিন্ন বিচ্ছিন্ন জীবিকার কথা।

    কলমে না হউক রক্তের কালিতে
    বীরউত্তম শাহ আলমের নন্দিত বাহুর নাগালে
    জেগে থাকা ভাষা শহীদের নির্ভেজাল অস্তিত্বের সোপানে
    একচিলতে মধ্যমায় অবশিষ্ট শেষ বিকেলের অন্তিম ইচ্ছের আলোটুকু পুরে।

    @আসিফ রহিম

  • আত্মকেন্দ্রিক

    আত্মকেন্দ্রিক

    সকালের আকাশটা যখন মেঘে ঢাকা
    আত্মপ্রত্যয়ী কবি তখন পৃথিবীর বুকচিড়ে হেঁটে চলেছেন অনবদ্য – ;

    বড় সড়ক ধরে মেঠোপথের কানেকানে অনেক কথা কবির, নদীর স্রোতে কল্পনার নাও ভাসায়ে গঞ্জে গঞ্জে ফেরি-

    কিছু শৈবাল সাথী হয় রাতারাতি
    কিছু কচুরিপানা পথরোধ করে দাঁড়িয়ে যায় সামনে –
    এভাবেই গ্রীষ্ম বর্ষা শেষে বসন্ত পেরিয়ে দিগন্তের গায়ে হেলান দিয়ে কবি তখনও আকাশ দেখেন- ;

    অবশেষে একদিন ঝরে পড়ে সমস্ত দাম
    ফিরে পায় ধারা অনিরুদ্ধ কিনারে
    কবি আপনমনে নিজের পথে হারিয়ে যান —

    দুর্বিনীত অক্ষর সেবকেরা কবির চলে যাওয়া দেখেন –
    দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শব্দ-দাসেরা আলো থেকে দূরে আরও দূরে ছিটকে পড়েন৷

  • ভালোবাসার চক্রব্যূহ

    ভালোবাসার চক্রব্যূহ

    ছোট্ট জলাশয় ভালোবাসতে চায় তটিনী কে
    কিন্তু সে যে ছোটে সাগরের পানে ভালোবাসার টানে।

    আর সেই সাগরের ভালোবাসা নিত্য ফেরে সৈকতে,
    একবুক ভালোবাসা নিয়ে বিশাল উর্মিমালা হয়ে আছড়ে পড়ে সৈকতে বালুকার বুকে!

    পাহাড়কে একতরফা ভালোবেসে কান্না হয়ে
    ঝিরিঝিরি ঝরে চলে ঝর্নাধারা লোকালয়ে!

    ভ্রুক্ষেপহীন পাহাড় তখন মেঘমালাকে ছুঁতে চেয়ে
    গুরুগম্ভীর ভাব ভংগীতে উচ্চশিরে
    অপলকে চেয়ে থাকে মেঘেদের পানে!

    মেঘেদের সময় কোথায়!বাতাসের ভালোবাসার
    টানে ছুটে বেড়ানো তাদের,হেথা থেকে অন্য কোথা!

    দিগন্তের টানে বিস্তীর্ন মাঠ মনে হয় মিশে গেছে
    কাছে যেতে যেতে দূরে সরে যায় মেলা না মেলার
    স্পর্শ -অস্পর্শের দোলাচালে!

    পর্বতকে ভালোবেসে জয়ের নেশায় মত্ত মানুষ
    প্রতিকূলতাকে পিছনে ফেলে এগিয়ে চলে
    ভালোবাসার টানে জীবনকে বাজি রেখে!

    মানবীর তরে মানবের প্রেম,উচুর তরে নিচু
    প্রকাশিত হলে, ছাড়াছাড়ি হয়েও ছাড়েনাতো
    কেউ কারো পিছু।

    জাত -কূল মান ধর্ম-অধর্ম নিয়ে দাম্ভিকতা অনাচার
    অত্যাচার আর চোখ রাংগানি চলে কতো শত!

    প্রকৃতি তার প্রেম করেছে উজাড় প্রাণীজগতের তরে
    মিথ্যে জেনেও সেই প্রেমের বলি হয়ে কত শত জন মরে।
    যারা পায় তাদের জীবন হয় সফল একথা সবাই জানে!

    ফাতেমা_হোসেন
    ২২/২/২২

  • একুশের আত্মত্যাগ

    একুশের আত্মত্যাগ

    একুশ মানে প্রাণের ভাষা,
    একুশ আমার গর্ব।
    ধন্য মোরা, ধন্য একুশ,
    রক্ত দাতাদের জন্য।

    একুশ মানে রক্তের বন্যা,
    রক্তাক্ত মায়ের কোল।
    একুশ মানে রক্তাক্ত মাঠ,
    শীতল সবুজ ঘাস।

    একুশে দিয়েছে অনেক রক্ত,
    যারা বাংলার ভক্ত।
    একুশ মানে ভাষা শহীদের,
    মায়ের কোলে রক্ত।

    একুশ মানে আত্মত্যাগ,
    মায়ের ভাষার জন্য।
    একুশ মানে গর্বিত মোরা,
    ভাষা শহীদের জন্য।

    অর্পন বড়ুয়া

  • আহারে বর্ণমালা, দুঃখিনী বর্ণমালা

    আহারে বর্ণমালা, দুঃখিনী বর্ণমালা

    হায়রে আমার দুঃখিনী বর্ণমালা
    তোমায় নিয়ে লিখবো বলে আমি,
    বুকের মধ্যে কেবলি লুকিয়ে রাখি
    আরণ্যকের দু’বিঘে আবাদি জমি।
    অনিশ্চিতের ঘর বেঁধেছি তাই
    সেই জমিতে বাসা বেঁধেছে সাপ,
    ফিরতি স্টেশন ধরবো বলে আমি
    হৃদয়ে মোর শোকের মনস্তাপ।

    ব র ক ত সা লা ম র ফি ক
    বটমুলে রমনার ঐ গোলাপ ফোঁটানো দিনে
    রক্তে ভেজা খোকার জামায় আমার রক্ত ঋনে,
    কত দিন রবে পদ্মা মেঘনা যমুনা বহমান?
    তথৈবচ বিস্মৃতির ঐ বিনাশী রক্তবান?
    পদ্মামেঘনাযমুনা’র ঐ অকুল ব্যাকুল তীরে
    লাল সবুজের বাংলার ঐ বিস্তির্ণ প্রান্তরে,
    ফিকে হওয়া গোধূলির ঐ বিষন্ন বিদায়
    করজোড়ে ভিক্ষে মাগে কি যেন বলিতে চায়!

    ”আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো
    একুশে ফেব্রুয়ারি,
    আমি কি ভুলিতে পারি?’

    আহা রে বর্ণমালা,
    দুঃখিনী বর্ণমালা।

    আরণ্যক শামছ
    ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২