Tag: কবিতা

  • আমার শহর

    আমার শহর

    কি করে বলি যে এ আমার শহর!
    আমার যে লুন্ঠন বা লোভের হাতেখড়ি হয়নি কখনো;
    আমার শব্দ,
    দেয়ালের নালিশহীন পলেস্তেরার মত এখোনো নিথর;
    আমার উপমা, কখনোই ঘৃণা ও ঈর্ষার পাঠশালা হতে পারেনি;
    আমার অস্তিত্ব উন্মোচন করে শুধুই ব্যবধান-
    আশরাফ-আতরাফের;
    আমি রপ্ত করতে পারিনি সাপের খোলস বদল আর ছড়াতে বিষাক্ত নিঃশ্বাস;
    আমি লংঘন শিখিনি, আমি লেহন শিখিনি,
    শুধু শিখেছি প্রার্থনা।

    কি করে বলি যে, এ আমার শহর,
    আমি, এ শহরের!

    এ শহরে কখনো কান্না হয়না বিজয়ী,
    বাতাসে ভেসে বেড়ায় শুধু কান্নার ফুলকি,
    খোলা জানালা খোঁজে;
    মুক্তি চায়,জবাব চায়;
    অথচ সবই নিরুত্তর,
    কানে আসে খল নায়কের খল খল হাসির শব্দ;
    সবুজ রাজপথে ঝরাপাতা বিছানো গালিচার মত সাজানো থাকে থরে থরে উপহাস!

    না, এ আমার শহর নয়, হতে পারে না!
    এখানে অনুতাপ নেই, অনুশোচনা নেই;
    নেই পাপের কম্পন!
    কোন অভিযোগ নেই, দৃঢ়তা নেই;
    ঋজুতা নেই ভালোবাসায়।
    এখানে কেউ লাবণ্য খোঁজেনা,
    নেই তরংগ রক্তের ভিতর।

    না, এ আমার শহর নয়, হতে পারে না!

  • জীবনের গল্প

    জীবনের গল্প

    জীবনের গল্পগুলো এমনই, একইরকম –
    দারুণ ঝড় শেষে মুক্ত সূর্য
    ঝলমলে রোদের দুপুর শেষে সুবর্ণ অপরাহ্ন
    ভাবুক গোধূলির বাঁকে বাঁকে অকৃত্রিম ভালোবাসা -!

    হাসিমুখ কিষাণীর বুকে প্রিয়তম পুরুষের ঘাম, সাতপুরুষের ভিটেয় অনাগত ভবিষ্যত-
    স্বপ্নের ঘোরে নেশাগ্রস্ত ঢেউয়ের ভাঙনে উজানভাটির গান-

    অনুপম অট্টালিকার জাঁকজকমে কৃত্রিম খোলসে অনাবৃত কষ্টের কাহিনী ;
    রঙিন সুরের ব্যঞ্জনায় বিকট আওয়াজ
    কান্নার জল অন্তরেই শুকিয়ে যায়—

    জীবনের গল্পগুলো এমনই এলোমেলো অগোছালো ; তবুও
    উঁকিঝুঁকি দিয়ে যায় মনে প্রেয়সীর নরম চাহনি-
    প্রেরণার ছবিজুড়ে পড়শীর প্রত্যাশা বুকে সুনীল ঘুম – ৷

  • আজীবন লেখনীর বন্ধন | Lifelong writing bond

    আজীবন লেখনীর বন্ধন | Lifelong writing bond

    আমি পড়তে চাই লিখতে চাই
    পাণ্ডুলিপি রেখ না আমার
    সকলের মাঝে জীবন আলোকপাত
    তোমাদের সাথে রুদ্ধদ্বার
    আমি পিপাসায় ছটফট করি
    পিপাসার্ত ক্ষুধা মেটাতে
    মুখে জল কণ্ঠনালী ভিজতে
    তোমাদের কণ্ঠ হতে।

    আমি আলোকপাত করতে চাই
    সোনালী সূর্যের সাথে
    আমি ভাটিয়ালি গান শুনি
    মাঝির পালতোলা নায়ে
    আমি দক্ষিণা সমীরণ খুঁজি
    হাজারো মানুষের ভিড়ে
    আমি হারিয়ে যেতে চাই
    তৃপ্ত মোনালিসার চোখে।

    আমি তোমাদের দেখতে চাই
    সত্যের ঝান্ডা তুলে
    অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা উঁচু
    তোমরা ধরবে তুলে
    আমি হিংসায় জ্বলে পুড়ে
    জ্ঞানীদের অনুসরণ করি
    তাদের থেকে আলাদা কিছু
    করে যেতে পারি।

    আমি সৃষ্টিশীল কবিদের দেখি
    তাদের অনুকরণে নয়
    আমি বিশ্বভূষণ তৈরি করতে
    পরিশ্রমে করিনি ভয়
    আমি মাতৃভাষা লালল করি
    আমার বাংলা ভাষা
    আমার সবটুকু চড়াই উতরাই
    আমি কলম চাষা।

    বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার সৃষ্টি তত্ত্ব
    নবযুগ তৈরির কলকাঠি
    বিশ্বভূষণ ঘুরে লেখনীর মাঝে
    সমাদৃত তোমরাই কুলকাঠি
    মহাজগত মহাবিশ্ব মহান শক্তি
    শতাব্দী শতাব্দী সাধন
    জীবন্ত কিংবদন্তি তুমি সাহিত্য
    আজীবন লেখনীর বন্ধন।

    ঢাকা, বাংলাদেশ।
    সময় – রাত দুইটা ১৬ মিনিট।

    I want to read and write
    Don’t keep my manuscript
    Life shines among all
    Closed door with you
    I am thirsty
    To satisfy the thirsty hunger
    Wet the throat with water in the mouth
    To be your voice.

    I want to shed light
    With the golden sun
    I listen to Bhatiali songs
    In the middle of the sail
    I’m looking for a southerly wind
    Crowds of thousands
    I want to get lost
    Satisfied Mona Lisa’s eyes.

    I want to see you
    Raise the flag of truth
    Raise your head against injustice
    You will catch
    I burn with violence
    Follow the wise
    Something different from them
    I can do it.

    I see creative poets
    Not in imitation of them
    I want to make Biswabhushan
    I did not work hard
    I cherish my mother tongue
    My Bengali language
    All my ups and downs
    I am a pen farmer.

    Scientific discovery creation theory
    The key to creating a new age
    In the middle of writing around the world
    Dear you, Kulkathi
    The cosmic universe is a great power
    Century accomplishment
    You are a living legend, literature
    Lifelong writing bond.

    Dhaka, Bangladesh.
    Time – 2:16 p.m

  • জলেই জীবন

    জলেই জীবন

    স্বপ্ন নদীর শেষ সীমানায়
    দিচ্ছে পাড়ি অনেক জাহাজ
    আকুল নাবিক তীরের খোঁজে
    খুব অসহায় আজকে সে আজ।

    অনেক দূরের পথের পরে
    হারিয়ে ফিরে আবার সে যে
    রাতের হাওয়ায় পথ পেরিয়ে
    পায়না খুঁজে আর নিজেকে।

    আগের সে দিন অনেক রঙিন
    রোদের আলোয় জলের ছোঁয়া
    বিকেল হলেই মাঠের পরে
    দেখতে পেতো আবছা ধোঁয়া।

    হঠাৎ করেই নিজের মনে
    বেরিয়ে পড়ে অচিন টানে
    নদীর বুকে বসত ভিটা
    জীবন চলে নতুন গানে।

    নদীর বুকে একার জীবন
    ক’দিন আর যায় যে ভালো
    কালোর শেষে আসে আলো
    সব যেনো আজ এলোমেলো।

    পাখির সাথে জলেই জীবন
    হারিয়ে আছি খুব অচেতন
    মানুষ খুঁজে চলছি একা
    তাকিয়ে আছি সব যে ফাঁকা।

  • প্রতিদান

    প্রতিদান

    শুন‍্য থেকে আসা
    শুন‍্যতেই প্রস্থান।
    মধ‍্যেখানে সংসারজীবন
    সুখ ও দুঃখের স্থান।

    চাওয়া পাওয়ার হিসেব
    যখন পাহাড়ও সমান।
    না পাওয়ার দুঃখ ব‍্যথা
    কাঁদায় শুধু প্রাণ।

    কারোর পানে তাকিয়ে নয়
    সম্মুখে হও আগুয়ান।
    ফল তুমি পাবেই পাবে
    পাবে পথেরও সন্ধান।

    লক্ষ‍্য তোমার থাকুক অটুট
    যেন আশায় থাকে টান।
    ধৈর্য্যের সাথে কাজ করে যাও
    পাবে প্রতিদান।

    সব‍্যসাচী দেবরায় (রাজু)
    ২৫.০২.২০২২

  • স্বর্গ

    স্বর্গ

    যে স্বর্গের স্বপ্নে বিভোর আমি রই মর্তলোকে
    খুঁজি কি সেই স্বর্গ আপনার আপনায়
    যে বিশ্বাস ভালোবাসা ভিত্তি প্রতিটি মানুষের
    আমি কি থাকি বিলীন তাহাতেই!

    স্বর্গ সে তো বেশী কিছু নয়, সবই আছে এই মর্ত্যলোকে
    বিধাতার প্রতিটি সৃষ্টিতে,

    ক্রাউনপয়েন্ট অরেগনের ওই পাহাড় চূড়ায়
    যখন দাঁড়ালাম মনে হলো স্বর্গ তো এমনই!
    এইরকম নীল আকাশ,পাহাড়, সাগর
    আর সাথে প্রিয়জন আমারই।

    প্রথম যখন ভালোবাসলাম মনে হলো
    এই তো আমার স্বর্গ
    যখন সন্তানরা পাশে থাকে মা বলে ডাকে
    সেও এক স্বর্গীয় অনুভব।

    তাই খুঁজে ফিরি স্বর্গ জীবনের পরতে পরতে
    এই মর্তের কঠিন মৃত্তিকালোকে,
    প্রতিটি মানুষের অন্তরআলোকে
    আমার কাব্যলোকের ছন্দে ছন্দে
    কবিতার প্রতিটি ছত্রে ছত্রে
    কাব্যভাবনায়।

    শাহনাজ পারভীন মিতা
    একুশে বইমেলা ২৫ শে ফেব্রুয়ারী,২০২২ইং
    বিকাল ৫.৩০ মিনিট
    পান্জেরী প্রকাশনী লিমিটেড।

  • এক কোটি বছর পর

    এক কোটি বছর পর

    ধরো তোমার সাথে আবার দ্যাখা
    এক কোটি বছর পর।

    গ্রীণ-জোনে বসে আছো। উদ্ভ্রান্ত চোখে তাকিয়ে আছো।

    আমি তখন সড়কের মোড়ে মোড়ে চা-কফি বিক্রি করি। তোমার পাশে অন্য যুবক।
    তোমার বন্ধু অথবা তোমার ভাই অথবা প্রিয়তম প্রিয়জন।

    চোখের ওপর চোখ পড়তেই-
    তুমি বলে উঠলে-
    দু কাপ চা দিয়েন ভাই।

    আমার এক হাতে চায়ের ফ্লাস্ক আর অন্যহাতে কোটি বছর ধরে সংরক্ষিত হাতের পরশ।

    বুকের বিষুব রেখায়, হৃদয়ের মান মন্দিরে, আর ঠোঁট ঘড়িতে সেই পুরোনো লকেট
    এখনো চলমান, জীবিত।
    এই লন চা। আমি তাকিয়ে আছি।
    তোমার চিবুক গড়িয়ে পড়ছে ঘাম।
    ভীষণ রোদে তুমি ঘর্মাক্ত।
    আমায় এভাবে তাকাতে দেখে তোমার পাশের লোকটি বলে উঠলো-
    এই বেয়াদ্দপ!
    এভাবে তাকাচ্ছিস কেন?

    তুমি তাকে থামিয়ে বললে-
    ধুর!ছাড়ো তো।

    আমার হাতে ধরিয়ে দেয়া হলো একশ টাকার একটি পুরোনো নোট।

    নোটের ওপর লেখা
    সুমাইয়া জাফরকে ভালোবাসে।

    আমি আশি টাকা ফেরত দিয়ে বললাম,
    এই লন মিঁয়া ভাই।

    আবারো তাকিয়ে পলক ফেলতেই
    চলে গেলাম।
    রেখে গেলাম শুষ্ক পথের ওপর বৃষ্টিস্নাত স্নিগ্ধতা।
    তুমি কি যেন ভাবছো!
    আমায় দেখতে ভিখিরির মতো লাগছিলো।
    ছেঁড়া গেঞ্জি। পরনে বেশ পুরাতন নোংরা লুঙ্গি।

    হঠাৎ তোমার মনে পড়লো-
    আমার বুকে
    ঝোলানো
    একটি ইংরেজী
    অক্ষর
    আর (R)
    তুমি বলে উঠলে-
    এ তো আমি লালনকে দিয়েছিলাম!

    আমি নিঁখোজ হয়ে ছিলাম।
    তবে কেন?কবে?
    তোমার কারণে!কিংবা আমার কারণে!
    আজ আর মনে নেই।

    কিছুদূর যেতে আমার মনে পড়লো-
    তোমার হাতে ছিলো শাখা,কপালে ছিলো সিঁদুর।
    হ্যাঁ। হ্যাঁ
    ঠিক তাই।

    উনি তোমার স্বামী।

    আমার বুকের ভেতর তেত্রিশ কোটি দেবতা
    কাঁদছে।

    ক্রমশঃ ভেঙে পড়ছে
    ইমারত।
    পথে পথে কাঁচের গুড়ো।
    পা কেঁটে যাচ্ছে সমস্ত পথিকের
    যাদের গন্তব্য
    এক মাত্র প্রেমই ছিলো।

    সিরিয়ায় কোটিবছর আগের সেই নৃশংসতা এখন কয়েক কোটিগুণ৷

    কবির সুমন মারা গিয়েছিলেন।

    সালমা খাতুন আত্মহত্যা করেছিলেন।

    এরপর আরো কয়েককোটি বছর পর এখনো বেঁচে আছি।

    আমার সপ্তাহে কেবল একটিদিনই
    ঘুরে ঘুরে আসে।

    শুক্রবার, শুক্রবার, শুক্রবার…

  • হৃদয় মুক্তি

    হৃদয় মুক্তি

    কালো বেড়ালের রক্তে মৌতাত দৃষ্টি,
    নেশা ধরানো হৃদয় নাচন সৃষ্টি।
    অন্ধকারে সব বেড়াল দেখায় ধূসর ,
    সাদা রুমালে ঢাকা মুখ গুলো মুখর।
    কল্পলোকে ভাসে জোনাকি দের আলো,
    আশাহত মুখ স্বল্পালোকে দেখে ভালো।
    আজ যারা উন্মুখ যেতে অভিসারে,
    মুক্তিস্নাতো সূর্যের প্রথম আলোক প্রকাশে।
    নেশাগ্রস্ত দের পারবেনা নেশা ধরাতে,
    ঝিমঝিম নেশা জাগে মুক্তির বরাতে।
    বিচ্ছিন্নতায় ফিরে পায় নিজ অবস্থান,
    পরশুরামের তপস্যায় প্রাপ্তি যে সুমহান।
    উই এর ঢিবি ব্যর্থ ধরাতে ঘুণ ,
    ঘুণাক্ষরেও চায়না মানষিক খুন।
    স্রোতধারায় মুক্তকেশির কেশাগ্র সিঞ্চন,
    গতিধারা ব্যর্থ ধরে রাখতে বন্ধন।

    সুরজিৎ পাল
    ২৫.০২.২০২২

  • উদাস বসন্ত

    উদাস বসন্ত

    ভাবছি,
    বৃষ্টিভেজা ফাগুন আমার
    মেঘের খামে তোমার নামে
    পাঠিয়ে দেবো…..
    দেখবে ছুঁয়ে ফাগুন আমার
    ভিজবে তুমিও…..
    চোখের কোণে জল লুকিয়ে
    মুছবে তুমিও…..
    দেখবে খুঁজে পেতেও পারো
    একটু দীর্ঘশ্বাস ;
    কিংবা পেতেও পারো
    এক উদাসী ক্যানভাস….
    পারলে রঙের আচড় কেটো
    উদাস বসন্তে….
    নাহয়, বৃষ্টি হয়েই ঝরে পড়ো
    হৃদয় আঙ্গিনাতে….

  • সেই পথে

    সেই পথে

    সেই পথে যেতে চাই
    মন থেকে পেতে চাই
    নির্ঘুম রাত আজ
    কালো পথে আলো নাই।

    মন বলে আসবে
    হাসিমুখে ভাসবে
    অযাচিত স্বপ্নের
    নীল পথে গান গাই।

    রাতদিন প্রতিদিন
    সেই পথ সীমাহীন
    পাশে তুমি নাই আজ
    গানে যেনো সুর নাই।

    মুসাফির ছুটে যায়
    আমাকেও নিতে চায়
    বসে থাকি অসহায়
    তুমি সহ যেতে চাই।

    আলো পথে একা যাই
    তুমি যেনো নীরবে
    পাশাপাশি হেটে যাও
    আমি দেখে ছুটে যাই।

    আর কি আসবে
    জীবনের দিন সব
    হারিয়ে কোন পথে
    আলো হাতে খুঁজে যাই।

    তারাদের সাথে চলি
    কথা বলি বাতাসে
    আসবে জানি তুমি
    ছায়াপথে মেঘ নাই।

    মন বলে পাবো দিন
    ঘুড়ি উড়াই আকাশে
    দিন খুঁজে পেয়ে আজ
    ঘুড়ির সাথে উড়ে যাই।

    অলিউর রহমান খান
    ২৫.০২.২২