Tag: কবিতা

  • বেদনার নহর

    বেদনার নহর

    ঝলমল করছে রাতের ঢাকা ,
    বলাকার পাখায় আমার ভেসে থাকা
    ক্ষুদ্র গবাক্ষ পথে ছুঁয়ে রই তোমায়
    প্রিয় মানুষ ,প্রিয়জন ,আপনজন
    এখানে আমার সবাই ।

    উড়ে চলেছি মেঘেদের সাথে
    বর্ষার কালো মেঘ ছুঁয়ে ছুঁয়ে
    মনে হয় ভেসে রই গহীন গানে
    জীবনের এক কঠিন টানাপোড়নে।

    তোমাকেই ছেড়ে যাবো, না আকড়ে রবো
    আমার শহর প্রিয় শহর
    যেখানে জন্ম বেড়ে ওঠা
    শৈশব কৈশোর যৌবনের দুরন্ত সময়।

    স্বপ্ন দেখা আকাশ ছুঁয়ে যাবার
    ওই নীলগিরি থেকে মাউন্ট হুডের
    বরফ চূড়া যেখানে মিশে রয় স্বপ্ন আমার ।

    প্রিয়জন ,সংসার সবই এই শহরেই
    তাই তো তোমায় ছেড়ে যেতে
    বুকের মাঝে এক বেদনার নহর বয়ে যায়।
    ইট কাঠ পাথর কনক্রিটের শহর কিন্তু
    তারই মাঝে প্রেম আমার।

    কবিতা লেখা মনের ছন্দের দোলায়
    জীবনের খেলাঘরে অহর্নিশ আনন্দ বেদনায়।

    ঢাকা থেকে দুবাইগামী ফ্লাইটে লেখা ।
    ১৫ই জুলাই ২০২২ইং

  • ভ্রুণ আজ মহিরুহ

    ভ্রুণ আজ মহিরুহ

    চার চোখের মিলনে
    আজ ভালোবাসার ভ্রুণের
    স্হান হলো আমাদের
    হৃদয় জঠরে!!

    প্রতিটা নিঃশ্বাসে আমি
    সে ভ্রুণের উপস্হিতি টের পেয়েছি,
    সন্তানসম্ভবা মায়েরা যেভাবে
    তার সন্তানকে উপলব্ধি করেন।
    আমিও কত স্বপ্ন দেখেছি
    এই ভ্রুণ বড়ো হবে!
    আমাদের ভালোবাসার
    সংসার হবে,
    সংসারে সুখের নহর বইবে
    আলাদিনের চেরাগের ছোঁয়ায়।

    আমার সমস্ত আশা, আকাঙ্খা, স্বপ্ন,
    ভালোবাসার
    অকাল মৃত্যু হলো,
    চল্লিশ মাস বয়সে
    মিসক্যারেজের মাধ্যমে।
    আমার ভালোবাসা
    পরিণত হলো,
    রাবণের লীলাখেলায়!!

    আমি অমাবস্যায়
    ম্লান হয়ে,
    অসহায় চাঁদকে
    করেছি আলোকিত।
    দিনের পর দিন
    একে একে চলে যায়
    কষ্টের খেয়ায়
    পরের সুখ পার করে।

    আমি জানি না,
    আমার সোনাজান
    কোথায়,কিভাবে, কেমন
    করে বেঁচে আছে?

    বুকে বেদনার
    বালুচর সাহারা হয়েছে
    পঁয়ত্রিশ বছর ধরে।
    আমার ভালোবাসার ভ্রুণ
    ফিরে পেলাম উনচল্লিশ
    বছর পরে।
    আজ ভালোবাসা
    বিস্তর বটবৃক্ষ,
    বটবৃক্ষের বয়স একচল্লিশ।

    বটবৃক্ষের বাতাসে
    আজ হৃদয়পূর্ণ হয়
    সুবাসিত অক্সিজেনে।

    আর কার্বন ডাই অক্সাইড
    আমাকে পারবে না
    মৃত্যুর ভয় দেখাতে।
    দশরথী দূর্গা
    আজ রেখেছে
    তার আর্শিবাদের হাত
    পরম যতনে
    আমার মাথায়!

    কামরুজ্জামান খোকন
    খুলনা,১৬.০৫.২০২২ ইং

  • সবাই একরকম হয়না

    সবাই একরকম হয়না

    সবাই একরকম হয়না
    যদি এমন হবে তবে ওমন হবে কে?
    ছোট্ট যে সংসার সেখানেও সবাই
    একমত হয়না, দ্বিমত হয়, বহুমুখী হয়, সুরেলা হয়, বেসুরো হয়।
    সংগীদের মধ্যেও সবাই একরকম হয় না।
    কেউ সেলফিস, কেউ জেলি ফিস,
    কেউ বাইম মাছের মত পিছলে যায়,
    কেউ কৈ মাছের মত একটু বৃষ্টি পেলেই উথলে ওঠে।

    ক্লাসে কেউ ফার্স্ট হয়,
    কেউ ফেল করে হার্ট হয়
    কেউ সাহায্যের হাত বাড়ায়
    আবার কেউ সুযোগ বুঝে পালায়
    কেউ সহমর্মী হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে
    তাই সবাই একরকম হয় না
    কেউ কেউ অন্য রকমও হয়।

    কেউ কেউ প্রেম করে আবার
    কেউ কেউ প্রেম ভাংগে
    কেউ কেউ প্রেম করে বিয়ে করে আবার
    কেউ কেউ বিয়ে করে পরকীয়া করে
    কেউ সৎ উপদেশ দেয় আবার কেউ কুটবুদ্ধি ঢালে
    কেউ ভালবাসা জানায়
    কেউ হিংসা-দ্বেস ছড়ায়
    তাই সবাই একরকম হয়না, ঐরকমও হয়।

    সংসারে কেউ চাকুরে,
    কেউ বেকার,
    কেউ কিং মেকার।
    সবাই প্রমোশন চায়
    কেউ পায়, কেউ পায় না।
    যে পায় সে আর পিছু ফিরে তাকায় না
    যে পড়ে থাকে সে আর উপরের আকাশ দেখতে পারেনা।

    কারো প্রাচুর্য আছে আবার কারো আছে গরীবীয়ানা
    ধনীর আছে দারিদ্রবিলাস আর
    গরীবের কখনো কখনো সুখবিলাস।
    অতএব, সবাই একরকম হয়না, অন্যরকমও হয়।

    তবে সবাই দু’টি বিষয়ে একরকম: স্বার্থ আর স্বপ্ন।
    সবাই স্বার্থের হায়ার ম্যাথ ভাল জানে
    ধনী বোঝে উপেনের দু’বিঘা জমি তার বড় বেশী প্রয়োজন
    আর গরীব বোঝে ঐ দু’ বিঘা জমি বেচে ত্রয়োদশী মেয়েটার
    বিয়ে না দিলে পাড়ার শকুনেরা ছিঁড়েখুঁড়ে খাবে।

    ধনী স্বপ্ন দেখে
    হেথা নয় হোথা নয়, অন্য কোথা অন্য কোন খানে তার যথার্থ ঠিকানা
    আর গরীব স্বপ্ন দেখে
    যাকাতের টাকাটা পেলেই আগামী দু’মাস সে নিরাপদ।

    তাই কিভাবে সবাই একরকম হবে
    যেরকম হওয়ার কথা আমরা কেউ কেউ ভাবি!

  • বৈধব্য

    বৈধব্য

    কি কথা কহিবারে সে চায়
    কি কথা কহিব তাহারে আমি
    নিজেরেই শুধাই?

    অনেক বছর আগে
    তারুন্যের উচ্ছ্বাসে
    প্রজাপতি প্রজাপতি গান
    উড়াউড়ি জুড়ে ময়দান।
    জোড়ে দোঁহে প্রাণ
    মন মাতাল
    ঘোরলাগা কাল,
    আকাশে উড়ে ফুল ও পাখি
    আঁখিগুলি আকুলিবিকুলি
    হৃদয়ের গভীরে শুধু ছোঁয়াছুঁয়ি।

    তারপর-
    চলিয়া গিয়াছে কলকাল
    বিকেলে দুপুরে,পরদিন সকাল
    অতিক্রান্ত মহাকাল।
    তারপর আভরণহীন হাত
    নিকষকালো অন্ধকার রাত
    জড়ায়ে রহিয়াছে তাহার সাথ।
    তবুও আজো তার রেশ
    ক্ষানিকটা আবিষ্ট অবশিষ্ট বেশ
    সে শুধু মৌনতায় ঢাকা
    বুকের বাঁকেত এখনো আঁকা।

    আজ হায়
    সম্মুখে সে দাঁড়ায়
    দেখি-
    মুছিয়া গিয়াছে রঙ
    শুভ্র বসনে ধুসর সব…

  • অনন্ত নক্ষত্রে, মেঘবালিকা!

    অনন্ত নক্ষত্রে, মেঘবালিকা!

    আমার বুকের ছয়টি রিপ এক এক করে কেঁটে ফেললো!
    অসম্ভব ধারালো ইলেকট্রিক করাত দিয়ে।
    বুকটা দুইহাতে ফাঁক করে,
    ডাক্তার বাবু বের করে আনলেন,
    যেখানে তোঁকে আজন্ম লালন করেছি!

    ডাক্তার হৃদয় দেখে,
    মুঁচকি হেসে বললো
    আহারে প্রায় চল্লিশ বছর যত্ন হয় না!
    আয় তোর হৃদয়টা সাঁজিয়ে দেই
    ফুলে, ফলে একাকার করে,
    তোর প্রাণেশ্বরীর জন্যে।

    কী বিচ্ছিরি তোর হত দরিদ্র হৃদয়?
    যেখানে দুটোতে ব্লক শতভাগ,
    একটায় পঁচানব্বই
    অন্যটা আর না কই!
    তোর সমস্ত ভালোবাসার প্রজাপতিরা
    আজ দিকভ্রান্ত !
    আড়াই ঘন্টা ধরে চললো,
    পথ পরিস্কারের নামে,
    যমে দূতের লড়াই !

    একটানা বাহাত্তর ঘন্টা
    চোখ থেকে ঝড়েছে পানি,
    চোখের জলে নদী হয়,
    গল্পে পড়লেও
    সেদিন নিজেই হলাম,
    খাল কাটার শ্রমিক !!

    জানিস? মৃত্যুর মুখোমুখি,
    লাইফলাইনে দাঁড়িয়ে
    একবারের জন্যেও তুই
    মনের আড়ালে জাসনি!
    আমি জীবন মরনের মাঝামাঝি
    অপার্থিব দুনিয়াতে তোকে
    নিয়ে লিখেছি হাজারো কবিতা।
    স্মৃতিবিচ্ছুরিত না হলে,
    তোকে শোনাবো সেই মর্মময়ী
    আমার প্রাণেরশ্বরীর গল্পগাঁথা!

    মরনেও কোন ভয় ছিলো না,
    ক্যানোনা, শেষবারের মতো হলেও
    তোর চাঁদমুখটা আমার বুকের গভীরে
    হৃদয়ে বেঁধে নিয়েছিলাম।

    কামরুজ্জামামান খোকন
    ল্যাবএইড
    ঢাকা,১০.০৬.২০২১

  • প্রতারক ভ্রমর

    প্রতারক ভ্রমর

    ফুলেরা তার কৌমার্য হারায়
    প্রতারক প্রেমিকের খপ্পরে।
    তারপর অমানিশায় কাটে
    প্রতিটি রাত জীবনের আমবস্যা হয়ে !
    প্রতারককে বিশ্বাস করে
    উঁজার করেছিল ভালোবাসা,
    দিয়েছিল সাঁতার কাটতে
    কামিণীর সরোবরে!

    বিবাগী ভ্রমর!
    একফুলে নয় তুষ্ট
    তাইতো ছড়িয়ে দিয়ে কষ্ট
    আজ সে অন্যের সান্নিধ্যে!

    হারানো সুখ,
    হৃদয়ে নিয়ে,
    ফুলে করে ভালোথাকার অভিনয়,
    একজনমে তার
    জানা হবে না আর,
    ভালোবাসা কারে কয়!!?

    কামরুজ্জামান খোকন
    খুলনা, ০৮.০৭.২০২২

  • পাতায় পাতায়

    পাতায় পাতায়

    ভালো থাকি পাতায় পাতায়
    উড়ে চলি পাখির ডানায়
    মন ছুটে কোন অজানায়
    মেঘের সাথে কোথা হারায়।

    বেঁচে থাকি পাতায় পাতায়
    আকাশের ঐ নীল সীমানায়
    ভেসে চলি সবুজ ভেলায়
    গাছ ও পাখির নতুন ডানায়।

    সুখে থাকি পাতায় পাতায়
    আগে ছিলাম সেই অবহেলায়
    এখন আছি নতুন পাখায়
    ভালো আছি সবুজ পাতায়।

    জেগে থাকি পাতায় পাতায়
    ভোরের ঘাসে নতুন হাওয়ায়
    মানুষের জীবন কি পায়
    আশা নিয়ে ঘুরে বেড়ায়।

    অলিউর রহমান রাজিব
    মিরপুর ঢাকা
    ০৮.০৭.২২

  • স্বপ্নের কথামালা

    স্বপ্নের কথামালা

    স্বপ্ন: সেতো মনের কথা
    কেউ কি দিতে পারে বাঁধা?
    মন চায় পাখি হয়ে উড়তে
    ফুল হয়ে ফুটতে, মেঘ হয়ে ভাসতে
    বৃষ্টি হয়ে ঝরতে।

    মনের অলিতে গলিতে যত চাওয়া
    স্বপ্নালোকে পাওয়া
    স্বপ্নের লাল নীল হলুদে পাখি
    নীলিমায় ডানা মেলে রৌদ্রলোকে।

    স্বপ্নে থাকেনা বৈষেম্যের পঙ্কিলতা
    থাকেনা দু:খ, বেদনা, কলহ, কালিমা
    প্রান্তরে সর্ষে ক্ষেতের ছায়া
    ভোরের শিশির জোনাকির আলোকে মায়া
    ঘুমের অরণ্যে স্বপ্নের কথামালা
    ভুলে থাকা জীবনের সব দু:খ জ্বালা।।

  • সাম্যবাদ

    সাম্যবাদ

    চুপি চুপি রাত
    মিটিমিটি তারা
    তুমি আছো সাথে
    আমি দিশেহারা।

    আজি এই রজনী
    এসো গো সজনী
    সাজাই ঘরখানি দুজন মিলিয়া,
    তুমি যদি চাও
    রাঙাবো দু-পাও
    চুলের খোঁপাটি দিবো খুলিয়া।

    চুলের সুবাসে
    রঙের আবেশে
    হইওনা উতলা অবেলা প্রহরে,
    এসো গো সজনী
    অর্ধ রজনী
    সাজাই ঘরখানি নিজের করে।

    দুজনে মিলেমিশে
    বাহিরেতে খেলে হেসে
    আয়-ব্যয় নিয়ে থাকি সারাদিন ধরে,
    তবুও যেনো হাহাকার!

    বাড়িয়ে দেয় শূণ্যতার
    বাড়ে শিশু অযতন, সোনার চাদরে।

    দুজনেই মিলে যদি
    প্রেম-ভালোবাসা করি
    দুজনেই কেন নয়, এ’ঘর সাজাতে?

    দুজনেই মিলে যদি
    সন্তানের দাবিদার
    দুজনেই কেন নয় তাহারে গড়িতে?

  • একা

    একা

    তুমিময় দিনটা যেন থাকে অমলিন
    কখনো জানবে, পানসে সেই তুমিহীন।
    কখনো দিন গুলো যেন দিন নয়
    এখনো ঐ দূরে হারানোর যে ভয়,
    তুমিময় রাত গুলো চাঁদ– জোছনা
    এখন কোথায় তুমি, আমি জানি না।
    কোথাও কোনো চলতি পথে হয়ে গেলে দেখা,
    ভালো করে দেখো চেয়ে আমি, তুমি হীন একা।
    কোথাও কোনো বুক– শপ বা, শপিং মলে
    তুমি আমি কব কথা যদি দেখা মিলে।
    এই তুমি হীন আমিটা রাত্রির মতো
    সুখে–দুঃখে সাথী মোরা গল্প কতশত!
    একদিন চলে নাতো ; যদি দেখা না হয়
    তখন সময় গুলো স্রোতের মতো বয়।
    এখন বইছে সময় কত অনুনয়ে
    এমনই করে সময় গুলো যেত যদি বয়ে।
    কত করেছি আরজ… কি? একটু দেবে দেখা
    তাহলে আর ক্ষণগুলো হতো না আর একা…!
    এমনই কত সময় আরো যাবে বয়ে,
    একদিন ঘুরবো দু’জন একাকী হয়ে।
    একদিন স্মৃতির পাতা স্মৃতির সরণীতে
    বসাবে মেলা এক একাকিনীর হয়ে,
    সেই দিনও হয়তো জানবে না সখা,
    তোমার স্মৃতির ডালা হাতে রয়েছি যে একা…!