Tag: কবিতা

  • এক কাপ চা

    এক কাপ চা

    এক কাপ চা
    আর একটি অলস বিকেল
    সময় কেমন থমকে আছে
    যাচ্ছেনা তো আগের মতো।

    হন্যে হয়ে ছন্নছাড়া
    ভালোবাসার প্রাপ্তিহারা
    মানুষগুলো শুধুই ঘুরে
    ঘুরে কেবল ভিন্নপথে
    যে পথ গেছে এঁকেবেঁকে
    সে পথ আজ মুক্তমতে।

    আমিও ঘুরি তুমিও দেখো
    চোখ মেলে আজ দুনিয়া হারায়
    ভীষণ রকম অন্য মানুষ
    আশায় কেবল শক্তি পেয়ে
    নেশার জালে মুগ্ধ থাকি
    দেখার নেশা পাওয়ার নেশা
    তুমিও হারাও জীবন নদে।

    আকাশ থেকে স্বপ্ন কুড়াও
    ঐ যে জীবন ঐ যে পাখি
    নীড় হারা সেই ছোট্ট পাখি
    আমায় তারা গল্প শোনায়
    গল্পে গল্পে সময় কাটে
    চায়ের কথা মনে পড়ে
    সামনে দেখি এক কাপ চা
    বিকেলটা তো আগের মতোই
    এইতো বিকেল, অলস বিকেল।

  • আরশিতে দেখি

    আরশিতে দেখি

    একদিন হঠাৎ আরশিতে দেখি
    আমার আমি তো নাই
    আয়নায় পেছনে লুকানো আমিকে
    বারবার খুঁজে ফিরি তাই।

    সকালে যে নীল আকাশে ভাসে
    বিকেলের মেঘ সেই রঙ মাখে।
    দক্ষিণের জানালায় জমানো
    সকল কাজ খুব ভোরে উঁকি দেয়
    ভাবনার সবচাইতে উঁচু ডালে
    সেগুলো সাজাবো বলে আপোসের তালা খুলি।

    অতঃপর লটারীতে প্রতিদিন যা উঠে
    যেভাবে যখন জীবন ডাকে
    সেভাবেই আমি ফিরতি পথে বাড়ি ফিরি।
    জরুরী সকল কাজ লুকোনোই থাকে
    মনের উঁচু তাক অগোছালো থেকে যায়
    সময়ের বেড়াজালে বুঝিবা কখনো হারায়?!

    শাহনাজ
    ৬.০৮.২০২২

  • মায়া

    মায়া

    এবার গৃহত্যাগী জোছনায় তোমার অসুখের সুখ কিনতে বেচে দিলাম
    আমার চিলেকোঠা,
    নিলামে উঠলো পাঁচ টাকা দামের বলপেন,
    খাতার পাতারা উড়লো যুদ্ধ বিমান হয়ে!
    বৃষ্টির মতো ঝরলো শব্দ মালা
    শুধু সাগরের দুই পাড়ে জমলো নুনের পাহাড়,
    তাতে খানিকটা লেপ্টে গেলো মেঘের মেয়ে কাজল।
    একাকিত্বের অবসাদে আত্মহত্যা করতে গিয়েও
    ছাঁদের কিনারা থেকে ফিরে এলো চেয়ার একা টেবিলটার মায়ায়!
    যথানিয়মে এলো কটকটে রোদ পোড়াতে চিলেকোঠা, ঘর-দোর।
    ফিরে এলো দমকা হাওয়া প্রতিদিনের মতো দুলিয়ে দিতে রংচটা পর্দা,
    শুধু ফিরতে পারলোনা, অসময়ে ঝরে পড়া অসমাপ্ত কথার ফুল!!

  • প্রেম প্রটোকল

    প্রেম প্রটোকল

    আসা যাওয়ার পথে, তুমিময় প্রাতে
    কি এক টানে উন্মাদনা, মানেনা মানা।
    নষ্ট ভ্রষ্ট পথে কামনা প্রেম নয়
    প্রেম থাকে হৃদয়ে লেখা
    ভালোবাসা নয় পটে আঁকা
    বিকিকিনি প্রেম নয়
    প্রেমময় জীবন মধুময়।
    এ যুগের বন্যায় ভেসে যায় অন্যায়
    ভালোবাসা জবরদখল, লুটপাট প্রেম
    বুর্জোয়া গুটিবাজ হয়না কারো শ্যাম।

    ধর্ম হোক কর্মে প্রচার, নয় প্রটোকল
    ভবের লেনাদেনায় বুঝেনা আসল নকল।
    কলে কলে পলে পলে, চলছে ধর্মের চাকা
    কখন কে বিচারক, সোজা কিনা বাঁকা।
    বকাবকি যদি বক্তব্য হয়,
    আমজনতা কেন ব্যক্তিত্ব নয়!
    ব্যক্তিগত অভিপ্রায়, চর্চা কেন সর্বদায়
    সংস্কৃতি, সম্পাদক সবকিছু নামের রসদ।

    চলছে ঘরে বাইরে, অহমিকা মামুর জোরে
    প্রেম বিহনে চণ্ডীদাস
    রজকিনীকে খুঁজে বেড়ায়।
    হিংসানিন্দা ছল চলছে কলে কৌশলে
    জীবনের দাম, টাকায় নাম
    রক্ষক যেন ভক্ষক চলে হেসে খেলে।
    একশো প্রেমিকা প্রেমিক গায় গুণগান
    ব্যাটেবলে বিজয়ী, বলে সেঞ্চুরিয়ান।
    এ যুগের সুশীল বড্ড সহনশীল
    খেয়ালে চলছে সমাজ, তাদের মুখে থাকে খিল।

    খিলখিলিয়ে হাসে জনতা,
    মনে লুকায় তিক্ত ব্যথা
    বলে এক অর্বাচীন, সে নাকি দীনহীন
    মুখবন্ধ বোবা, হতে চাইনা হাবাগোবা
    নির্বাক তারা থাক, সত্য ছেড়ে করে পাপ
    বাপরে বাপ এ কোন দেশ
    ভালোবাসা ব্যক্তিবিশেষ,
    অশেষ রইল মনের কথা
    জীবন নয় নকশীকাঁথা,
    প্রেম ভালোবাসা হোক খাসা
    ভ্যবিচার রহস্য, উন্মুক্ত হোক ইতিকথা।

    সম্পা তালুকদার
    ১৮/০৭/২০২২ সকালবেলা

  • বসন্তের হাওয়া

    বসন্তের হাওয়া

    দখিন হাওয়ায় দুলছে আমার
    মন পবনের নাঁও
    তোকে নিয়ে হারায় আমার মন
    অচিনপুরে সুদূর…
    সেই সুদূরে হাঁটছি দুজনে
    হাতের উপর হাতটি রেখে…
    গড়েছি দুজন মিলে ভালবাসার রঙ্গমহল—
    সেই রঙ্গমহলে খেলব মোরা,,,
    রঙংধনুর সাতটি রঙে ভালবাসার রঙখেলা—-
    আমার হৃদয় পূর্ণ রেখো তোমার প্রেমের প্লাবণে,,,
    হৃদয় আমার ভরিয়ে দাও
    কোকিল ডাকা , পলাশ রাঙা, উদাস ফাগুনে—-
    তোমার বুকে যাপন করি আমার রাত্রিকাল,,
    তোমার আমার গল্প গাঁথে ফাল্গুনী সকাল—-
    কোথায় লাগে টান হারিয়ে ফেলি দিশে,,,
    তোমার আমার ভালবাসার জলে বসন্ত যাই মিশে—
    যদিও বসন্ত রঙ লাগছে তোমার কৃঞ্চচূড়ার ডালে
    অপেক্ষা কর আবির নিয়ে রাঙাবো তোমায়,,,
    সোহাগ জড়ানো গালে—
    মনেতে ফাগুন বনেতে আগুন
    উত্তলা উদাসী মন,,,
    প্রণয়পটে তোমার ছবি ভাসে অনুক্ষণ—
    যদি পারো এসো কিন্তু
    আমার স্বপ্নলোকে মোরা সবুজ ছাঁয়ার গাঁই,,,,
    স্বপ্নীল এক যুগল চোখের মায়াবী অঞ্জনায়
    আজন্ম লালিত স্বপ্নচোখে গড়ব আমার ,,,
    ছোট্টনীড়ে ভালবাসার ঠাঁই—
    এসো চলে যাই দুজনে মিলে দূরে বহুদূরে
    পালিয়ে পরিযায়ী পাখি হয়ে ঐদূর নীল আকাশপানে,,,
    পাখিদের বিরামহীন কোলাহলে বন্ধনহীন বাঁধা পেরিয়ে
    নিস্বর্গ নিটোল প্রকৃতির মাঝে অনাবিল আকুন্ঠ সুরের আলাপনে—-
    নিভৃত নিকুঞ্জে আবছা আলো ছায়ায়,,
    পূর্নিমার চাঁদের আলোর বিভাসিত মনে ,,,
    ভাসবো দুজনে মিলে ভালবাসার নীল জোছনায়—
    কাঁরুকার্য খচিত আল্পনা আঁকা আমার সুটোল আঙিনায়,,
    ফুলের সুগন্ধী ছড়িয়ে দেব উঞ্চ অভৎর্থনায়,,
    মঙ্গলালোকে আবির ছড়াবো নব বসন্তের হাওয়ায় ফুলেল শুভেচ্ছায়—

    সূর্বণা বড়ুয়া
    24-4-2022

  • একজন আবরারের কান্না

    একজন আবরারের কান্না

    আমি জ্বলজ্বল করে নিজস্ব আগুনে জ্বলে উঠি
    আমি দেখি মৃত্যুর ভয়াবহ রক্তাক্ত সময়
    আমি ঘুমালে স্বপ্নে দেখি আবরারের আর্তনাদ
    চিৎকার শুনি তন্দ্রার ভেতর
    দেখি আবরারের নিষ্পাপ মুখ।

    লাঠি-লোহার বড় স্ট্যাম্প উঠেছিল
    আবরারের প্রতিটা অঙ্গ প্রত্যেঙ্গে
    সে করুন কান্না মাগো, মাগো বাঁচাও, বাঁচাও
    আর মারবেননা, আর মারবেন না।

    আবরারের আত্মা থেকে ডেকে বলে
    জাগো মানুষের সুপ্ত শক্তি, হাটে মাঠে ঘাটে
    শেষ পর্যন্ত খুনিদের প্রতি সম্মান রেখে বলেছিল
    ভাই ভাই গাে আমার শরীরটা খুব খারাপ লাগছে
    গলেনি মন একজন হায়নারও
    সে চলে গেল অসীম মহাকাশের অন্তে।

    বেঁচে আছো, বেঁচে আছো আবরার তুমি
    প্রতিটা মানুষের হৃদয়ে, মানুষের চােখের জলে
    তুমি অমরত্বে বন্দি হবে
    প্রতিটি বাংলাদেশের মানুষের আত্মার ভিতরে
    মনের গহীনে, সবার মনে।।

  • অমানিশা

    অমানিশা

    প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝে
    মাঝি হারিয়েছে তার কূল!
    যে কম্পাসের আশায়
    সে মাঝসাগরে নেমেছিলো,
    যদি পথ হারিয়ে যায়, তবে কম্পাস তাকে সঠিক পথ দেখাবে!
    কিন্তু,
    মাঝি কখনোই ভাবেনি,
    যদি কম্পাসের মন খারাপ হয়, কিংবা মাঝির কোন আচরণের কারণে কম্পাস যদি দিকভ্রান্ত হয় ?
    তখন কী উপায় হবে??

    জীবন তো আর রইবে না, যেখানে একবুক ভালোবাসা তার জন্যে জমানো থাকে !

    অপরিনত বয়সের সেই মাঝি,,,
    আজ প্রেমের ভেলায়
    দুহাত দিয়ে লগি চালায়
    আর ভাবে,
    একদিন না একদিন সুখ সাগরে ভেলা পৌঁছাবে!!

    কামরুজ্জামান খোকন
    খুলনা,
    ১৭.০৭.২০২২

  • সংগোপনে

    সংগোপনে

    ঝিরি ঝিরি বাতাসে এলো চুল খুলে
    আমি একা বসে, তুমি আসবে বলে
    হবে দেখা আজ বুঝি তোমারই সনে
    আসবে কি তবে তুমি সংগোপনে।

    মনে মন কথা কয় তব সুরে সুরে
    কোকিলের কুহু ডাকা ভর দুপুরে
    রয়েছো গো তুমি এই মনেরই কোনে
    আসবে কি তুমি ওগো সংগোপনে।

    এলো চুল উড়ে মোর ঝিরিঝিরি বাতাসে
    ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে পাখী খোলা আকাশে
    মন মোর উড়ে যায় পাখীদের সনে
    আসবে কি তুমি ওগো সংগোপনে।

    তারা ভরা রাতে ওই চাঁদ উঠেছে
    ওই বাঁকা চাঁদে মোর মন মেতেছে।
    জোনাকিরা দলে দলে ভিড় করেছে
    আসবে তুমি তাই আলো জেলেছে।

    প্রেমময় মন মোর তোমারে যে চায়
    বেদনার সুরে তাই গান সে যে গায়
    চুপিসারে কে যেন গুনগুন গানে
    এসেছো কি তুমি তবে সংগোপনে।

    ১৭ই জুলাই ২০২২
    সময়ঃ দুপুর ৩ঃ৩০ মিনিট

  • চৈত্রের খরায় বর্ষা

    চৈত্রের খরায় বর্ষা

    চৈত্রের খরা করছে উল্লাস নেই বর্ষার জৌলুশ
    ঘাম মেখে স্নান সারছে সিদ্ধ সব পুরুষ,
    আকাশ পানে তাকিয়ে আছে বেবাক লোক
    মেঘের ছায়ায় কাঁপছে আকাশ নেই বৃষ্টির জোঁক।

    গাছ গাছালি করছে খেলা পাখিদের কলতানে
    বাতাস নিল যে ছুটি কোন সুদূরে মায়ার টানে,
    বাষ্প কণা হারিয়ে গেছে যাইনি নীল আকাশে
    মেঘ বালিকা কাঁদছে না তাই বর্ষার জৌলুশে।

    হাঁসফাঁস করছে মানুষ রৌদ্রের তেজে
    বৃষ্টি যে আছে কেবল ভারিক্কি মেজাজে।
    শ্রাবণের ধারায় হচ্ছে না বরিষন ক্ষেপাটে বর্ষায়
    তৃষ্ণায় ধুঁকছে শরীর প্রাণ সবার যায় যায়।

    দু চারখানি চিঠি দিলাম আকাশের ঠিকানায়
    মুষলধারে বৃষ্টি পাঠাক মানুষের আঙিনায়।
    রোদ আর বৃষ্টিতে হয়ে যাক মিতালী
    মনের মাঝে সুর তুলে গেয়ে যাব গীতালি।

    ।।।।স্মরণিকা চৌধুরী
    ১৬/৭/২২

  • রোজনামচা

    রোজনামচা

    দাম….দাম……দাম
    সবেতেই বেড়ে চলেছে দুম-দাম,
    পড়তে দেখিনা কালসিটে পিঠ- পেটে
    ভাবনায় করে রাজ,পেট ভরানো বড়ো কাজ।
    ইনফ্লেশন শব্দ মুখে মুখে ফেরে
    বুঝিনা কোনো মানে,খরচ যায় বেড়ে
    বৌ বাচ্চার কথা শুধু মনে ঘোরে,
    আয় কেন বাড়েনা রে?

    দাম বেড়েছে জায়গা জমির,বাদ নেই গাড়ি-বাড়ির,তরি-তরকারি তার চেয়ে দামী পেট্রল ডিজেল,
    প্রভাবশালী সে প্রভাব প্রতি ক্ষেত্রে।

    ঘুম থেকে উঠে কোলগেট,৬০% বেশি,
    হাত মুখ ধুয়ে জামা কাপড় পরি,
    নূতন জামায় অপারগতা প্রকাশ করি,
    সকালের ব্রেড-বাটার,ক্যাঁচাপ, কফি,ডিম-দুধ সবই গেছে ঋণে,
    আছে শুধু চিড়ে আর গুঁড়,
    বাইকে দিই কিক পৌঁছাব তো ঠিক?
    বন্ধু বলে দুর্মূল্য তেল, হোমিওপ্যাথি শিশিতে রেখে শুকিয়ে দিবি বাইক কে,পৌঁছে যাবি অফিসে।

    অফিসে গিয়ে শান্তির খোঁজে বসি,
    বস ওঠে খেঁকিয়ে – ” একি এসি চালিয়েছ দেখি “, বিদ্যুৎ মাশুল কোথায় দেখেছো কি?
    কেন্টিন এর পিজা, পেস্ট্রি কোক খাওয়া,
    দিনের শেষে পকেটের হাঁক পাওয়া।
    রাস্তায় নেমে বাইক কাঁদে,
    পেট্রল জোটাতে যাই কার কাছে?
    বন্ধুর দেওয়া হোমিওপ্যাথি ডোজ,
    যদি পেতাম তেমন খোঁজ।
    ঠেলে-ঠেলে, ঘেমে নেয়ে বাড়ি পৌঁছাই,
    ক্ষিদের জ্বালায় খাবার চাই।
    বৌ বলে আজ ২০ তারিখ মাস বরাদ্দ একদম শেষ,

    এইতো আছি বেশ রোজনামচা’র দেশ,
    দৈনন্দিন খরচ বারে, মাস মাইনে শেষ।
    সব মোরা সইতে শিখেছি,
    প্রতিবাদের ভাষা ভুলে গেছি।
    কম্প্রোমাইজ শিখেছি মোরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সহা,
    গলদঘর্ম শেষে ঘুম কেন আসেনা?