Tag: অনুভাবনা

  • স্বর্ণকাব্য

    মেঘলা আকাশ মাঝে মাঝে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়ছে
    থেমে যাচ্ছে আবার পড়ছে । সেদিন ছিল অষ্টমী বিকালে ভদ্রলোকের হঠাৎ মুক্তার কথা মনে পড়ল বলল যাই মণ্ডপে মন্ডপে গিয়ে খুঁজে আসি
    মুক্তা হচ্ছে তার এক্স গার্লফ্রেন্ড আর আমার ফ্রেন্ড
    অনেক গুলো বছর হলো ওর সাথে আমাদের কোন যোগাযোগ নেই
    আমি বললাম
    তুমি কি বের হবে?
    নাকি ঘরেই বসে থাকবে তার থেকে চলো ভেলপুরি খেয়ে আসি।
    বললো এই বৃষ্টি তে?
    নাহ্
    এখন মনে হয় থেমে গেছে চলো।
    অনেক দিন পর শুধুমাত্র আমি আর পাশের বাড়ির ভদ্রলোক একসঙ্গে বের হলাম।
    আগে প্রায় বাইকে লং এ যাওয়া হতো , এখন আর আগের মতো জীবন নেই অনেক কিছু পাল্টে গেছে বদলে গেছি আমি বদলে গেছে সে।
    গোধূলি থেকে সন্ধ্যা হয়ে গেল ভেলপুরির গন্তব্যে পৌঁছাতে বাসা থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে
    যেতে যেতে দু’জনে অনেক কথা কিন্তু সরাসরি আমাদের কথা হয় না ।
    আকারে ইঙ্গিতে সে আমাকে অনেক কিছু ই বোঝাতে চাইছে
    কিন্তু তার সব বুঝ তো আমি সেই কবেই বুঝে আছি ।
    ভেলপুরি খেতে খেতে আবার বৃষ্টি নামলো । এবার বাসায় ফিরবো কিভাবে ?
    ছোট একটা দোকানে আশ্রয় তো নিলাম কিন্তু বাইক ও ভিজে যাচ্ছে সাথে সাথে আমরা ও
    উষ্ণতা পেতে তাহলে হয়ে যাক এক কাপ চা
    বৃষ্টি ভেজা চা
    বৃষ্টি ভেজা সন্ধ্যা
    পাশে আমার সব থেকে আপনজন,
    তারপরও আমরা প্রতিবেশী
    হায় রে জীবন!!!
    চা শেষ কিন্তু বৃষ্টি শেষ হলো না
    কিছু করার নেই বাসায় ফিরতে হবে রাত হয়ে যাচ্ছে
    বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে ফিরছি
    বৃষ্টির ফোঁটা গুলো গায়ে খুব জোরে জোরে লাগছে
    শক্ত করে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করছে
    কিন্তু…….
    ,ঝুম বৃষ্টি তে শহরটাকে অন্য রকম লাগছে
    এই শহরে আমাদের কত এমন ভালো লাগার স্মৃতি ছিল
    এখন সব মলিন হয়ে গেছে
    ফ্যাকাসে হয়ে গেছে সম্পর্ক ।
    ——–স্বর্ণ সমুদ্র।

  • কিসিলা (কিসমিস নসিলা)

    ছোটবেলায় কিসমিস খেতে খুব ইচ্ছা করত। আম্মা খেতে দিত না। বাজার থেকে অল্প কিসমিস এনে আম্মা কুটুরিতে লুকিয়ে রাখত। শুধুমাত্র সেমাই রান্না করার সময় সেই কুটুরি খোলা হত। ঐ সময় হাতে দুই তিনপিস পেয়ে অতৃপ্ত আমার বাল্যকালে খুশীর রঙ লেগে যেত।

    যখন টাকা আয় শুরু করলাম তখন কিসমিস খাওয়া শুরু করলাম। মুঠো মুঠো করে কিসমিস খাইছি। হয়ত বাল্যকালের সেই তিনপিসের মত টেস্ট পাই নাই, তবে অতৃপ্ত বাল্যকালের উপর কিছুটা প্রতিশোধ নিতে তো পারছি।

    ঐদিন এক সুপার শপে দেখলাম নসিলা। ছোটবেলায় টিভিতে শুধু এড দেখতাম, বাচ্চারা টিফিনে নসিলা দিয়ে পাউরুটি মাখিয়ে নিয়ে যায়। এড দেখে বুঝতাম এই জিনিস বিরাট সুস্বাদু,কিন্তু মধ্যবিত্ত বাবা মায়ের নসিলার বোতল কিনে দেয়ার আগ্রহ বা সক্ষমতা কোনটাই ছিল না।

    ঐদিন এক বোতল নসিলা কিনে এনে আঙুল দিয়া চেটে পুটে খাইছি। যেটুকো সক্ষমতা আছে, সেটুকোর মধ্যে কোন আক্ষেপ রাখা যাবে না।

    এক কলিগের তেল আনতে নুন ফুরায় অবস্থা। একদিন দেখি ফুল ফ্যামিলি কক্সবাজার যাবার বিমানের টিকেট সহ উপস্থিত। সবাই কানাঘুষা করতেছে। আমি ভাইরে ডেকে জিজ্ঞেস করলাম ঘটনা কি?

    সে বলল, আব্বা সারাজীবন স্বপ্ন দেখাইছে রোল ১ হইলে কক্সবাজার নিয়া যাবে। ক্লাসে সবসময় রোল ১ হইত, কিন্তু স্কুল শিক্ষক আব্বার সক্ষমতা হয় নাই। আমিও ছেলেকে বলছিলাম রোল ১ হলে কক্সবাজার নিয়া যাব। একটাই জীবন,আমি আমার আব্বার মত হতে চাইনা।

    জীবনটা তো ছোট। আজকে আপনার স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার বয়স। টাকা জমিয়ে জমিয়ে কোন একদিন সময় করে বউ নিয়ে ঘুরতে যাবেন, ও স্বপ্ন সহজে পূরণ হবে না। সময়, টাকা, অবসর তিনটা একসাথে আপনার কোনদিন হয়ে উঠবে না।

    জীবন একটু একটু চলে যাচ্ছে। আজকে যা গেল ওটাই শেষ। আজকে যা করতে পারেন নাই, ওটাই মিস করলেন। যেটুকো আপনার আছে এটুকুই অল্প করে উপভোগ করার মানেই জীবন।

    জীবনটাকে নসিলা ভেবে চেটেপুটে খেতে থাকুন, কিসমিসের মত ভবিষ্যতের আশায় কুটুরিতে জমা করে রাখলে শুধু আফসোস বাড়বে।

    ©নাজিরুল ইসলাম

  • একজন ইন্দ্রাণী চক্রবর্তী

    একজন ইন্দ্রাণী চক্রবর্তী, আমার অনেক বন্ধুরা ও আমি
    ওঁর নাম ইন্দ্রাণী চক্রবর্তী, আমি বলি দিদি, ইন্দ্রাণীদি।
    ফেসবুকে পরিচয়। এখনও দেখা হয়নি। এমন কি কথাও হয়নি।
    অথচ, আমার মতো এক অভাজনের লেখায় সুর দিয়েছেন, কন্ঠ দিয়েছেন।
    ইন্দ্রাণী চক্রবর্তী কলকাতার মানুষ। বছর দুয়েক ধরে পারিবারিক কারণে আমেরিকায় অবস্থান করছেন, ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান ডিয়েগোতে।
    ফেসবুকের দেয়ালে ঝুলিয়ে দেওয়া আমার একটা কবিতা পড়ে ইন্দ্রাণীদি মন্তব্য করলেন, এতে সুরারোপ করা যেতে পারে।
    ঢাকার এক অতিসাধারণ শখের লিখিয়ের লেখা, তাতে সুর করছেন, কন্ঠ দিচ্ছেন কলকাতার একজন গুণীজন! এবং সেই সুর সৃষ্টি হচ্ছে আমেরিকার পশ্চিম তীর, প্রশান্ত মহাসাগরের হাওয়ায় হাওয়ায়! যে দুজনের এখনও দেখা হয়নি, কথা হয়নি!
    সত্যিই, এই পৃথিবীতে কতোই না বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে যাচ্ছে !
    ইন্দ্রাণীদির এই ছোট্ট মন্তব্যটুকুই আমাকে ফিরিয়ে নিয়ে গেলো আমার ধূসর হয়ে যাওয়া শৈশবে।
    ফেসবুক নিয়ে অনেক তীর্যক মন্তব্য শুনেছি। অনেক বরেণ্য ব্যক্তি নৈতিক কারণে ফেসবুক থেকে দূরে থাকেন এবং থাকার পরামর্শ দেন।
    কিন্তু, ফেসবুক না থাকলে আমার এই ষাট পেরুনো বয়সে এতো বন্ধু পেতাম না, এটাও তো সত্যি। এটাও তো সত্যি, পেতাম না ইন্দ্রাণীদিকেও!
    চমৎকার গান করেন ইন্দ্রাণী চক্রবর্তী। মূলতঃ উচ্চাঙ্গ, রবীন্দ্র ও নজরুল। পাশাপাশি রাগপ্রধানসহ বিভিন্ন আঙ্গিকের গান। আকাশবাণী কলকাতা ও দূরদর্শনের নিয়মিত শিল্পী। এ পর্যন্ত তাঁর পাঁচটি গানের সিডি প্রকাশ হয়েছে। আগ্রহীরা ইউটিউবে ইন্দ্রাণী চক্রবর্তীর গান শুনতে পাবেন।
    ইন্দ্রাণী চক্রবর্তীর উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতগুরু পন্ডিত অরুণ ভাদুড়ী, রবীন্দ্রসঙ্গীতে শিক্ষাগুরু সুচিত্রা মিত্র। সঙ্গীত জগতের এই দুই দিকপাল আজ আর আমাদের মাঝে নেই। তবে, তাঁদের আলোকচ্ছটায় যে কয়েকজন সৌভাগ্যবান উদ্ভাসিত হয়েছেন, ইন্দ্রাণী চক্রবর্তী তাঁদেরই একজন।
    সেই ১৯৬১-৬২ সাল। কতোই আর বয়স। পাঁচ-ছয় বছর বয়স।
    ভুলে গিয়েছি অনেক কিছুই।
    ভুলিনি ধূসর হয়ে যাওয়া সেই স্মৃতি।
    ঢাকার মালিবাগের বাসায় প্রতিবেশীদের অনেকেই এসেছে কলের গানের গান শুনতে। আমি কলের গানের বাড়ির ছেলে বলে সব থেকে কাছে গিয়ে কলের গান রাখা টেবিলে হাত রেখে দাঁড়িয়ে গান শোনার সুবিধাভোগী! অন্যেরা একটু দূরে। শিশুসুলভ এক ধরণের গর্ব ও আনন্দ আমাকে কি উদ্বেল করতো?
    মেজো ভাই পিনের ছোট্ট শক্ত কাগজের বাক্সটা থেকে পিন বের করছে, কুকুরের ছবি সম্বলিত কালো গোল রেকর্ড একটা করে শেষ হলে নুতন পিন লাগিয়ে দিচ্ছে বাচ্চা হাতির মতো কলের গানের শুঁড়ের মাথায়! অনুরোধ অনুযায়ী রেকর্ড পাল্টে যাচ্ছে। মোটা কাগজের প্যাকেটে একটার পর একটা করে সাজানো আছে রেকর্ডগুলো।
    কখনো হেমন্তের কন্ঠে, ‘শান্ত নদীটি যেনো পটে আঁকা ছবিটি…’, কখনো জগন্ময়ের কন্ঠ, ‘তুমি আজ কতো দূরে…’!
    তখন সেই পাঁচ ছয় বছরের শিশু মনে কি এমন কোনো ইচ্ছা হয়েছিলো, ‘আহা, আমিও যদি এমন গান গাইতে পারতাম! আহা, আমিও যদি এমন গান লিখতে পারতাম!’
    দৃশ্যতঃ এমন ভাবনা শিশুমনে জেগে ওঠার কথা নয়। শিশু মন শুধু মুগ্ধ হয়, বিস্মিত হয়।
    কিন্তু মনোবিজ্ঞানীরা অবচেতন মনের জগত আবিষ্কার করলেন। সে এক বিস্ময়কর জগত। আমৃত্যু অজানাই থেকে যায় সেই অবচেতন মনের গহীনে বসবাস করা বৈচিত্র্যময় রঙিন আবেগগুলোর কথা!
    তখন কি ঘুনাক্ষরেও জানতাম, ষাট বছর পরে, ২০২২ সালে আমি ক্লান্ত শ্রান্ত এক প্রবীণ, ফেসবুক নামক এক অদ্ভুত মাধ্যমে মনের ভেতর জমে থাকা নানান কথা নিয়ে গল্প লেখার চেষ্টা করবো? চেষ্টা করবো কবিতা লেখার?
    ১৯৭০ সাল পর্যন্ত সারা পৃথিবী জুড়ে ব্রাজিল থেকে নেপাল পর্যন্ত অনেক ‘পেন ফ্রেন্ড’ ছিলো। মুক্তি যুদ্ধে সব চিঠিপত্র ঠিকানা হারিয়ে গেলেও কিছু কিছু নাম এখনও মনে আছে।
    ব্রাজিলের জোয়েল মোরেইরা, অস্ট্রিয়ার মেইডল রোম্যান, অস্ট্রেলিয়ার (কুইন্সল্যান্ড) জন কোলে, ডাব্লু এ কাল্টহার্ড, কানাডার (কুইবেক) ড্যানিয়েল প্যাটিগ্রু, ভারতের (মাদ্রাজ) কোকিলা গুরুস্বামী ও পি থানগাপ্পান(কোয়েম্বাটুর), নেপালের অনুপ শ্রেষ্ঠাচারিয়া, সিলনের (শ্রীলঙ্কা) বনী টেইলর, আমেরিকার (ডেট্রয়েট, মিশিগান) বেভারলি কান্ট্রিম্যান, চেকোস্লোভাকিয়ার মাডলো জান, জাপানের চেইকো ফুগিমাকি,…… আরও অনেক!
    যুদ্ধে হারিয়েছি আমার স্মৃতি বিজড়িত শৈশব!
    উদ্ভ্রান্ত যৌবনের আরেক যুদ্ধে হারিয়েছি দিক নিশানা!
    জীবনের শেষ বেলায় অলস সময় কাটাতে গিয়ে নুতন করে আবার পাওয়া গেলো বন্ধু!
    ইন্দ্রাণী চক্রবর্তী তেমনই একজন।
    কারও কারও ভালো লাগবে, এই ভেবেই সব বন্ধুদের জন্য গানটি ছেড়ে দিলাম ফেসবুকের হাওয়ায় হাওয়ায়…

  • প্রতিসরণ

    তুমি তোমার অবস্থান থেকে আমার অবস্থান
    বুঝতে পারবেনা কখনোই।

    তাই ভালোবাসো কিংবা আঘাত করো
    বারবার ভুল করে!

    © আলম
    ৪ অক্টোবর, ২০২১ ইং – সকাল ১০ টা ১৫ মি.

  • স্বর্ণ সমুদ্র

    সে জানে পৃথিবীতে কেউ তাকে এক সমুদ্র ভালোবাসে…

    তুমি ও আমার কাছে হার মেনে যাবে
    সাধক হওয়া অত সহজ নয়!

    বাঁতি রঙিন হয়
    কিন্তু জীবন রঙিন হয় না কেন?

    এক সমুদ্র ভালোবাসায় ভরে না মন সাঁই
    বুইড়া বয়সে তোমারেই আমি চাই…

    তারা সর্বদা ঝগড়া করে
    আর অভিমানে প্রেম করে!

    কোন এক সন্ধ্যায়
    দেখা হয়েছিলো মালতির সাথে…

    তুই যে আমার মিলন মালারে বন্ধু
    পিরিতের নকশী সুতায় বেঁধে রাখি

    তুমি টা নাই
    বাকি সব আগের মতন!

    হারানো পদার্থের পিছু ছুটে চলা জীবনের সবচেয়ে বড় বোকামী।
    যা আমার নয় তাঁর জন্য মিছে মায়া ত্যাগ কবে হবে?

    কতদিন নাই তুমিহীন
    বিষাদে ভরা বুক
    অথৈ জলে ভেসে যাই আমি
    সমুদ্র সম অভিমান জমুক।

    বয়স যতই হোক শিশু মন থাকুক আজীবন

    শরীরের জমাট বাঁধা রক্ত ই জানে
    কতটা ঘৃনা তার জন্য
    এক অদ্ভুদ নিয়ম প্রকৃতির
    যে ভালোবাসা একবার ঘৃণায় পরিনত হয়
    তা আর ভালোবাসায় ফিরে আসে না।

    আমি তো আমার আছি
    তুই আছিস তোর
    এ কেমন ভালোবাসা
    কাটে না রে ঘোর…

    সবকিছু জানিয়ে দিতে নেই
    কিছু জিনিস মনের মধ্যে লুকিয়ে রাখতে হয়।

    তুমি অনুভবে আমার থেকো
    থেকো চিরদিন আমার হয়ে…

    মানুষ হিসেবে আগে মানুষের মর্যাদাটা আগে হোক
    তারপর…

    আমি যে বদলে গেছি
    সেটা নিজেই এখন বুঝতে পারি গো…

    মায়া ত্যাগ হলেই হলো
    ভালোবাসায় কি এলো গেলো …

    অভিনয় টা খুব জরুরি জীবনে!

    যা যাবে তা চলে যাক
    এই কচু ভালোবাসা পড়ে থাক

    ভালোবাসলেই যে দাসত্ব করতে হবে তা কিন্তু নয়
    শ্রম দিয়ে খা

    অভিনয় করে সুখি হই না
    বা সুখের অভিনয় ও করি না
    কারন সুখের সঙ্গে কখনও আমার বন্ধুত্ব হয় না।

    প্রকৃতির থেকে প্রকৃত বন্ধু এখনও খুজেঁ পাই নি।
    সস্তি মেলে প্রকৃতির কাছে গেলে।

    যা কিছু আঁকড়ে ধরে বাচঁতে চাওয়া হয়
    সেটাই হাওয়ায় মিলিয়ে যায়।
    যার ইশারায় গোটা পৃথিবী চলছে ভাল মন্দ তিনিই দেখবেন
    আমার কি দায়।

    কাদাঁলে যে কাদঁতে ও হয় এটা ভুলে যাও কেন প্রিয়?

    যাদের কখনও মিল হবে না
    অথচ তাদের বিচ্ছেদ ও হবে না

    আমার অনুভুতি গুলি যবে থেকে তোমার কাছে মূল্যহীন হয়ে গেছে
    তবে থেকেই তোমাকে আমার অচেনা লাগে…

    সাঁইজি
    তুমি যতবার যেভাবেই ফিরে আসো
    দুই/তিন বাচ্চা র বাপ হলেও আমি তোমারে প্রত্যেকবার
    আমার কাছে টেনে নেবো। কারণ,
    এ জীবনে তোমাকে ফিরিয়ে দেওয়া আমার সাধ্যের বাইরে

    মানুষ সব সময় জীবন থেকে পালাতে চায়
    আবার মৃত্যু কে ও ভয় পায়
    কি অদ্ভুদ লীলাখেলা

    আমার আকাশ সমুদ্র কেন এত খালি
    চন্দের জোছনায় ঢেউ নাই কেন
    বাতাসে সৈকত এর শব্দ নাই কেন
    হঠাত খুবই মিস করছি
    তাই আবার অভিমানের বালুর পাহাড়
    সমুদ্র সৈকতে

    তোমার মধ্যে আবার যদি
    নিজেকে খুজেঁ পাই
    নিজে থেকেই ফিরবো
    কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছাড়াই।

    ভুলে থাকার কত আয়োজন
    বাঁচার জন্য ভোলাই প্রয়োজন।

    তোমার জন্য আইজকা
    সূর্য উদয় দেখা হইলো।
    প্রতিদিন ই ভোরে উঠি
    কিন্তু সূর্যের আলো
    গায়ে মাখা হয় না
    ভালোবাসি চাঁদ
    দিতাছো সূর্য
    বুঝলাম না ব্যাপারখানা

    আমি তো এক সমুদ্রই
    ভালোবেসেছি

    খুব অল্প সময়ের জীবন
    কত তাড়াতাড়ি চলে যায়।

    সৃষ্টিকর্তা আশ্চর্যজনক ভাবে জীবনে চমৎকার চমক রেখেছেন
    অথচ এই জীবন নিয়ে আমাদের কত অভিযোগ।

    এত ফাগুনের এত আগুন চারিদিকে তাতে তাপ নাই
    এখনও শীত লাগে

    প্রতিনিয়ত নতুন স্বপ্ন নিয়ে বাঁচে সব মানুষেরা
    কি অদ্ভুদ লীলাখেলা!
    প্রতিনিয়ত সেই স্বপ্ন বাচঁতে মানুষ হয় দিশেহারা
    কি অদ্ভুদ লীলাখেলা।

    মানুষ নিজেকে বদলানোর জন্য কত আয়োজন করে ।দিন শেষে কেউ হয় ব্যর্থ বা কেউ হয় সফল। তবে নিজের চেষ্টা তো অবশ্যই থাকবে হবে সেই সঙ্গে বিশ্বাস রাখতে হবে মহান সৃষ্টিকর্তার উপর। যিনি সৃষ্টি করেছেন তাঁর থেকে ভালো পৃথীবির কেউ ই কখনও বাসবে না। আমরা মায়ায় বা মোহে পড়ে জীবনে কিছু মানুষকে অবলম্বন মনে করি, ভাবি তাকে ছাড়া পৃথিবীতে বেঁচে থাকার অর্থ নেই। কিভাবে বাঁচব তাকে ছাড়া? অথচ আলহামদুলিল্লাহ মহান আল্লাহ্ তায়ালা কত সুন্দর করে জীবনের পরবর্তী নির্দেশনা গুলি সাজিয়ে গুছিয়ে রেখেছেন। আমরা সবাই সবাইকে ক্ষমা করি এবং পাশের মানুষটির প্রতি বেশি যত্নশীল হই।

    ~স্বর্ণ সমুদ্র

  • Time to Realize

    “করোনা একটি ভাইরাস। প্রতিরোধ করতে অ্যান্টি ভাইরাস দরকার। দু’আ-দুরুদের মাধ্যমে মুক্তি পাওয়া যাবে- এটি একটি অন্ধবিশ্বাস। বিজ্ঞানের এই যুগে এমন অন্ধবিশ্বাসে বিশ্বাস করার কোনো কারণ থাকতে পারে না।”

    ❗️সদ্যাতীত

    ডাক্তার: স্লামালিকুম হুজুর। কেমন আছেন?
    হুজুর: ওয়া আলাইকুমুস সালাম। জি, আলহামদুলিল্লাহ।
    ডাক্তার: হুজুর একটা প্রশ্ন ছিল।
    হুজুর: জি বলেন।
    ডাক্তার: যেকোনো কাজের পেছনে কারণ থাকে, যেটাকে আমরা কার্যকারণ বলি। মানুষের স্বাস্হ্য-সম্পর্কিত ব্যাপারে এই সূত্রটি ফলো করা হয়।
    হুজুর: এসব কথা আমাকে বলছেন কেন?
    ডাক্তার: কারণ আছে। বলছি। আগে কথাটা শেষ করি?
    হুজুর: আচ্ছা করেন।
    ডাক্তার: কারো শরীরে বাহ্যিক পচন ধরলে সেটাকে সেপটিক বলা হয়। আমরা তখন অ্যান্টি সেপটিক প্রেসক্রাইভ করি। কারো পেটব্যথা করছে। আমাদের কাছে এলে আমরা ব্যথানাশক ট্যাবলেট সাজেস্ট করি। অ্যান্টিবায়োটিক দিই। ওষুধ শরীরে যায়। যে কারণে ব্যথা হচ্ছে, ওষুধ সেটার সাথে যুদ্ধ করে। ভাইরাস কিল করে। ব্যথা কমে। ব্যথা কমার যুক্তি আছে। আছে না?
    হুজুর: আছে।
    ডাক্তার: একুশ শতকে এসে অযৌক্তিক কিছু করার কোনো যুক্তি থাকতে পারে না। অন্তত কোনো শিক্ষিত বুদ্ধিমান মানুষের জন্য তো অবশ্যই না। ঠিক কি না বলেন?
    হুজুর: বুঝলাম না এসব কথা আমাকে বলার কারণ কী? আমি তো ডাক্তার না। এসব শুনে আমি কী করব? আপনি কিছু একটা প্রশ্ন করতে চেয়েছিলেন। এতো ভূমিকা দিচ্ছেন কেন?
    ডাক্তার: কারণ আছে। প্রশ্নটি ব্যাখ্যা করবার জন্য ভূমিকাটা দরকার ছিল। এবার মূল পয়েন্টে আসি। আমাদের কাছে পেটব্যথা নিয়ে মানুষ আসে, আপনাদের কাছেও যায়। আমরা ট্যাবলেট দিই, আপনারা ফুঁ দেন। আমাদের ট্যাবলেট শরীরের ভেতরে গিয়ে কাজ করে। আপনাদের ফুঁ বাতাসে মিশে যায়। ব্যথা করছে পেটের ভেতর, আর আপনারা হুজুররা ফু দিচ্ছেন চামড়ার উপরে, মিশে যাচ্ছে বাতাসে। এই ফুঁতে পেটের ভেতরের ব্যথা কমার কোনো যুক্তি আছে?
    হুজুর: এসব ব্যাপার তুই কী বুঝবিরে নাস্তিকের বাচ্চা!

    ভ্যাবাচেকা খেয়ে উঠলেন ডাক্তার। এতবড় একজন আলেম এভাবে তাঁকে সরাসরি গালি দিতে পারেন- তাও একটি ভদ্রগোছের কনভারসেশনের মধ্যে- এটা তিনি কল্পনাও করেননি। রাগে কাঁপতে লাগলেন তিনি। চেহারা লাল হয়ে গেল তাঁর। কোনো রকমে নিজেকে সংযত করে বললেন, আমি আপনাকে অনেক বড় একজন আলেম বলেই জানতাম। শ্রদ্ধা করতাম। আপনার কাছ থেকে এমনটি আশা করিনি।

    হুজুরের মধ্যে কোনো ভাবান্তর নেই। তিনি স্বাভাবিকভাবেই বললেন, সমস্যা কী? আমি আবার কী করলাম?
    -‘কী করলাম’ মানে? আমাকে গালি দিয়ে আবার বলছেন কী করলাম!

    হুজুর বললেন, আমি একটা কথার কথা বললাম। তাতেই আপনার চেহারার রঙ পরিবর্তন হয়ে যাবে কেন? আপনি রাগে কাঁপতে শুরু করলেন কেন?

    ডাক্তার বললেন, আপনি আমাকে গালি দেবেন আর আমি রাগ করব না? সেটি আমাকে প্রভাবিত করবে না?

    হুজুর হাসছেন। ডাক্তারের মেজাজ আরো খারাপ হয়ে গেল। তিনি কড়া করে কিছু একটা বলতে যাবেন- তার আগেই হুজুর বললেন, সরি ডাক্তার সাব। আপনাকে কষ্ট দেওয়া আমার উদ্দেশ্য ছিল না। আপনার যেমন প্রশ্নটি করবার জন্য ভূমিকার দরকার ছিল, আমাকেও জবাব দেওয়ার জন্য একটা ভূমিকা দাঁড় করাতে হয়েছে। সরি ফর দ্যাট।

    ডাক্তার কৌতূহল নিয়ে তাকাচ্ছেন।

    হুজুর বলে যাচ্ছেন,
    আপনার যুক্তি ছিল, মানুষ পেট ব্যথা নিয়ে হুজুরদের কাছে এলে হুজুররা চামড়ার বাইরে দু’আ পড়ে ফুঁ দিয়ে দেন। যে ফুঁ বাতাসে মিশে যায়। এই ফুঁ-য়ের কারণে রোগীর অবস্থার পরিবর্তন হওয়ার কোনো যুক্তি থাকতে পারে না। আমি আপনাকে একটা গালি দিয়েছি। গালিটি আপনার শরীরে প্রবেশ করেনি। বাতাসের সাথে মিশে গেছে। এখন, আমার মুখ নি:সৃত একটি বাক্যের যদি এতো প্রভাব হতে পারে, আপনার চেহারার রঙ পাল্টে দিতে পারে, আপনার শরীরে কম্পন সৃষ্টি করতে পারে- আর এটা যদি আপনার যুক্তিতে ধরে, তাহলে আল্লাহর কালাম পড়ে ফুঁ দিলে সেটা বাতাসে মিশে গেলেও অন্যের শরীরে তা প্রভাব বিস্তার করতে পারে- এটা কেন যুক্তিতে ধরে না?

    ডাক্তার লজ্জিত হয়ে মাথা নিচু করে ফেললেন।
    এবার তাঁর যুক্তিতে ধরেছে।

    ❗️সম্প্রতি
    ‘করোনা ভাইরাসে বিশ্ব আতংকিত। স্বাস্থ্যবিজ্ঞানিরা আ্যান্টি ভাইরাস আবিস্কারের জন্য পেরেশান। আর মোল্লারা আছে দু’আ নিয়ে। এই দু’আ পড়লে করোনা থেকে বাঁচা যাবে। ঐ দু’আ পড়লে প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। যত্তসব কুসংস্কার!‘
    এদের সাথে যদি হুজুরকে দেখা করানো যেত!
    আফসোস! তিনি আর বেঁচে নেই।

    ❗️সংবাদ মাধ্যম বলছে, ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী করোনা অ্যাফেকটেড, কানাডার প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী অ্যাফেকটেড, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের প্রধান যোগাযোগ কর্মকর্তা ফেবিও ওয়াজনগার্টেন অ্যাফেকটেড… এঁরা সবাই ভিআইপি শ্রেণির লোক। হাই হেলথ সেফটি ম্যান্টেইন করেই চলাফেরা করেন। অধিক সতর্কতার অংশ হিশেবে নরমাল সাবান দিয়ে হাত না ধুয়ে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ইউজ করেন। তবুও তাঁরা আক্রান্ত হয়েছিলেন। কী ম্যাসেজ পাওয়া গেল?

    ‼️দ্যা ম্যাসেজ
    অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে, তবে সতর্কতাই শেষকথা নয়।
    নিয়ম মেনে চলতে হবে, তবে সেটাও যথেষ্ট নয়।
    বাঁচার উপায় একটাই-
    __ স্রষ্টার কাছে সৃষ্টির আত্মসমর্পন।

  • নিঃশব্দের শব্দ

    প্রতিটা নিঃশব্দের একটা নিজস্ব শব্দ থাকে।
    প্রতিটা শব্দের থাকে একটা পরিনতি-
    বলে যা বোঝাতে চেয়েছি
    না বলে বুঝিয়েছি অনেক বেশী…

    বীণা
    ০৩/০৫/২০১৮ইং

  • এক খন্ড দুই খন্ড

    বৃথাই বুকে পুষে বেড়াও গ্লানি-
    বৃথা তুমি নিজেকে দাও দন্ড।
    দুই খন্ডে সমাপ্ত যে বই খানি-
    তুমি ছিলে মাত্র তার এক খন্ড!

    বীণা
    ০৪/০৪/২০১৮ইং

  • সীসা

    জানালায় কাঁচ আছে, তাই বন্ধ জানালা দিয়ে বাইরে দেখতে পাই। দেখতে পাই কে যায় রে। জানালা দিয়ে তাকিয়ে নিজেকে দেখতে পায় খুব কম সংখ্যক মানুষ – আর সেই কমের দলে থাকাটা ভাগ্যের ব্যাপার কিনা বলতে পারবো না।

    কাঁচের জানালা দিয়ে বরাবরই অন্যদের দেখে যাই – আর মিলাই কিছু। ঐ যে দেখা যায় – আমার থেকে নীচু – আমার ভালো লাগে। ঐ যে দেখা যায় – আমার থেকে উচু – আমার তখন আর ভালো লাগে না। এভাবেই কাঁচের জানালা দিয়ে দেখি আর দেখি – খুশি হই আর বেজার হই – এটাই আমি। আমাকে আমি সরাসরি কখনোই দেখতে যে পাই না – কেনো পাইনা?

    একদিন জানালার কাঁচের ওপাশে সীসা লাগিয়ে দিতে বলো কাউকে। তুমিই জিতে যাবে – কেননা তুমি জানালা দিয়ে তাকালে দেখবে নিজেকেই সবসময়।

    নিজেকে দেখো – নিজেকে জানো

  • আড়ি

    আড়ি করা ভালো। মানুষটা মনে তো থাকে। হারিয়ে যায়না।