Select Page

৫ টাকায় সুচিত্রা সেন

৫ টাকায় সুচিত্রা সেন

সালটা ১৯৮১ বা ৮২ হবে। মিরপুরে নেভি কলোনীর সাথে সাগরিকা সিনেমা হল চালু হয় ভারতীয় ছবি উত্তম সুচিত্রার সাগরিকা ছবিটা দিয়ে। যথারীতি ছবিটা দেখলাম। সুচিত্রাকে দেখে মাথাটাই নষ্ট হয়ে গেলো। আমি সালার কি গাধা রে বাবা যে সুচিত্রাকে বিয়ে করতেই হবে। প্রতিদিন ছবিটা দেখতে যাই।

এমন একদিন দুপুরের শো দেখে বাসায় ফিরছি তখন প্রায় সন্ধ্যা। রাস্তায় দেখি কেউ যাদু দেখাচ্ছে তার ভীর, কেউ জোকের তেল বেচতেছে তার ভীর। সবগুলোই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষন দেখি। আর দেখি এটাই যেন চাইছিলাম। তাবিজ ওয়ালা। ৫ টাকা তাবিজ, ৫ টাকা তাবিজ। তাবিজ নিয়ে রাতে বালিশের নীচে রেখে ঘুমালে যাকে চাই তাকে নাকি স্বপ্নে দেখা যাবে। আমায় পায় কে। আমি তো সুচিত্রাকে চাই। কিনে ফেললাম তাবিজ, ৫ টাকার তাবিজ। এ যেন তাবিজ নয়, সুচিত্রাকে কিনে ফেললাম ৫ টাকা দিয়ে।

আমি সে কি যে খুশি আজ আর বলে বুঝাতে পারবো না। বাসায় ফিরলাম। তাড়াতাড়ি রাতের খাবার খেয়ে ঘুমাতে গেলাম। বালিশের নীচে তাবিজ। আজ আর ঘুম যেন কিছুতেই আসে না। একসময় কখন সকাল হয়ে গেছে টেরই পাইনি। তাড়াহুড়ো লেগে যায় ইস্কুলে যাবার।

পরের দিন একই কান্ড। বালিশের নীচে তাবিজ। আমি স্বপ্নে দেখি মারামারি করে বেড়াচ্ছি কিংবা ইস্কুলে জিন্নাহ স্যারের (আমাদের অংক স্যার ছিলেন, কয়েক বছর আগে জান্নাতবাসি হয়েছেন) হাতে মার খাই ইত্যাদি ইত্যাদি।

আশাহত হতে থাকলাম। এরপর তাবিজ ওয়ালাকে খুঁজি। আর কি পাই?

মজার ব্যাপার হলো যে তাবিজটা একসময় ফেলে দিয়েছিলাম ঠিকই কিন্তু কাজ করেছে আমার বিয়ের পর। আমি বিয়ে করেছিলাম ২০+ বয়েসে ১৯৮৮ সালে। খুচরা প্রেম যা এসেছে বিয়ের পরেই। সবাই ছিলো সুচিত্রা সেন।

আজও আমি সেই ৫ টাকার কথা ভুলিনি। বিরাট লস!

About The Author

Alam M

I’m Alam — writer of words, seeker of stories. I craft thoughts into lines that linger. I’m also a mathematician who loves to play with numbers.